ভারতে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের হামলার শিকার হয়েছে একটি মুসলিম পরিবার।
সোমবার (৭ জুলাই) মুসলিম মিররের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তরাখণ্ডের হরিদুয়ার জেলার হিন্দু তীর্থনগরী মঙ্গলৌরে কানওয়ার যাত্রার সময় একদল কানওয়ারিয়া তীর্থযাত্রী একটি মুসলিম পরিবারকে আক্রমণ করে। পরিবারটি গাড়িতে চড়ে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছিলো।
এর একটি ভিডিও ফুটেজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। হিন্দুদের এই বিশেষ তীর্থযাত্রা শান্তিপূর্ণ ও আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও মুসলিম পরিবারের উপর তাদের আক্রমণ লোকজনকে বিস্মিত করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী তীর্থযাত্রী রাস্তায় থাকা ওই মুসলিম পরিবারের গাড়িটি আটকিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করছেন। এসময় মুসলিম পরিবারটির কর্তা, তার স্ত্রী ও কন্যা শিশু দ্রুত গাড়ি থেকে বেরিয়ে সামনের দিকে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। তন্মধ্যেই কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদী তীর্থযাত্রী তাদের ধাওয়া করে। মারধর ও হেনস্তা করে। এর পূর্বে কয়েকজন তাদের গাড়ির দরজা ভেঙ্গে ফেলে।
স্বামীকে বাঁচাতে সামনে গেলে তার স্ত্রীকেও বোরখা ও বোরখার উড়না টেনে হেনস্তা করা হয়।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, কানওয়ার সহ বিভিন্ন তীর্থযাত্রার সময় প্রশাসন গাড়ি চলাচলের পর্যাপ্ত জায়গা না রেখে শিথিলতা অবলম্বন করে থাকে। তীর্থযাত্রীদের রাস্তাঘাটের নিয়ম-কানুন সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকে। এতে করে রাস্তায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মারধরের শিকার মুসলিম পরিবারের বেলায়ও তাই ঘটেছে। তীর্থযাত্রীরা রাস্তায় থাকায় গাড়িটিকে তাদের একেবারে পাশ দিয়ে চলতে হচ্ছিলো, যা তীর্থযাত্রীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় এবং গাড়িতে আক্রমণ করে বসে।
এই ঘটনা তীব্র সমালোচনা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করায় হরিদুয়ার পুলিশ বাধ্য হয়ে একটি বিবৃতি দেয়। যেখানে জানানো হয় যে, মঙ্গলৌরে কানওয়ার যাত্রার সময় একদল কানওয়ারিয়া তীর্থযাত্রী একটি গাড়িতে ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। গাড়ির মালিক নাজিমের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) নথিভুক্ত করা হয়েছে।