রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভারতের আইনে পরিণত হয়েছে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে আলোচনায় এসেছে চরম ইসলাম বিদ্বেষী ইউনিফর্ম সিভিল কোর্ড (ইউসিসি) বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’র নাম। খুব শীঘ্রই এই বিল সংসদে উত্থাপন করতে যাচ্ছে ভারতের ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এর ফলে মুসলিমদের সকল ধর্মীয় আইন বাতিল করে কেবলমাত্র উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের তৈরিকৃত আইন সকল ভারতবর্ষে কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিলের কথা প্রকাশ্যে এনেছেন উত্তরপ্রদেশের অম্রিতপুরের উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিধায়ক সুশীল কুমার শাক্য।
ইসলাম বিদ্বেষী এই বিধায়ক বলেন, “বিজেপি কখনোই তার কাঙ্খিত লক্ষ থেকে বিচ্যুত হয়নি। সেটা হোক রাম মন্দির নির্মাণ বা ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল অথবা ওয়াকফ বোর্ড সংশোধন—বিজেপি সর্বদা তাদের মূল লক্ষ্য সমূহ অর্জনের দিকেই কাজ করেছে। একটি বিষয় নিশ্চিত—অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল খুব শীঘ্রই আসছে।”
এদিকে, চলতি সপ্তাহে ভারতের নতুন আইনে পরিণত হয়েছে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫। যার ফলে মুসলিমদের ওয়াকফ সম্পত্তির অধিনে থাকা মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকা, কবরস্থান, দরগাহ ও ঈদগাহ অবৈধভাবে দখলের লাইসেন্স পেয়ে গেছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকার।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কি ?
ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৪-এ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউসিসি বিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটি মূলত ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে দেশের সমস্ত নাগরিকের জন্য একটি অভিন্ন (একইরকম) দেওয়ানি আইন চালুর প্রস্তাব দেয়।
বর্তমানে ভারতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের জন্য আলাদা আলাদা পার্সোনাল ল’ (ব্যক্তিগত আইন) আছে। যেমন মুসলিম পার্সোনাল ল, খ্রিস্টান পার্সোনাল ল ও হিন্দু পার্সোনাল ল’ ইত্যাদি। তবে ইউসিসি চালু হলে ব্যক্তিগত ধর্মীয় রীতিনীতিতে হস্তক্ষেপ করা হবে। বাতিল ঘোষনা করা হবে ভারতীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিজস্ব আইন ও সংস্কৃতি। এর পরিবর্তে উগ্র হিন্দু হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষের আইন গুলোই পরিণত হবে ভারতের অভিন্ন আইনে।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তরাখণ্ড ২০২৪ সালে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউসিসি চালু করা হয়েছে। এই মডেলকে পুরো ভারতবর্ষে প্রয়োগ করার স্বপ্ন দেখছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।
সূত্র: ক্লারিয়ন ইন্ডিয়া ও মুসলিম মিরর