বুধবার, জুন ১১, ২০২৫

আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়ায় অসন্তুষ্ট খালেদা জিয়া, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের নির্দেশ

spot_imgspot_img

ঈদুল আজহার রাতে (৭ জুন) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা গুলশানে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’তে ঈদ শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তিনি বলেন, প্রকাশ্যে অন্তবর্তী সরকারের সাথে সংঘাতে গেলে বিএনপির কোনো লাভ নেই, বরং দাবি থাকলে তা আলোচনার টেবিলে বসে সমাধান করতে হবে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সরকারকে উদ্দেশ করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ও সংঘাতমূলক বক্তব্যে খালেদা জিয়া অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দলের শীর্ষ নেতাদের তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন।

চেয়ারপারসনের এই নির্দেশনার পরপরই ৯ জুন সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্ভাব্য বৈঠক ও দলের বর্তমান কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।

দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়ার হস্তক্ষেপেই আন্দোলনকেন্দ্রিক কৌশল থেকে কিছুটা সরে এসে আলোচনার দিকে ঝুঁকছে বিএনপি।

৬ জুন সন্ধ্যায় ঈদুল আজহার আগের দিনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস জানান, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার পর রাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান এবং রাতেই দলের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এর পরদিন রাতেই চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দেন। এবং সেই বক্তব্যের ভিত্তিতেই শুরু হয় নতুন কৌশল নির্ধারণ।

আজ মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বৈঠকটি ওইদিন স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন,
ভিন্নমত থাকা মানেই শত্রুতা নয়, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা ৩১ দফা সংস্কার দিয়েছি, যা বিএনপির আদর্শে ভিত্তিক। যেগুলো এখন সম্ভব নয়, সেগুলো ভবিষ্যৎ নির্বাচিত পার্লামেন্টে বাস্তবায়ন হবে।

ড. ইউনূসের ঘোষণায় বিএনপির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল ক্ষুব্ধ। এপ্রিল মাসে নির্বাচন আয়োজন আবহাওয়া ও রমজানের কারণে উপযোগী নয় বলে দাবি করে বিএনপি। পাশাপাশি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন না করার যৌক্তিকতা ড. ইউনূস ব্যাখ্যা করেননি বলেও অভিযোগ তোলে দলটি।

তবে খালেদা জিয়ার নির্দেশনার পর আলোচনা ও সমঝোতার দিকেই বিএনপির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক দেশের রাজনৈতিক উত্তাপ হ্রাস করে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি করতে পারে।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img