৫ম প্রজন্মের অত্যাধুনিক তুর্কি যুদ্ধবিমান ‘কানের’ (KAAN) সবচেয়ে বড় ক্রেতা হতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া।
বুধবার (১১ জুন) তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝে এবিষয়ে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সাথে আমাদের একটি নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তির আওতায় দেশটিতে ৪৮টি ‘কান’ (KAAN) যুদ্ধবিমান রপ্তানি করবে তুরস্ক।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, তুরস্ক নির্মিত ৫ম প্রজন্মের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ক্রয়ের এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চুক্তি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এজন্য এক এক্স বার্তায় ‘কান’ (KAAN) প্রকল্পে অবদান রাখা সকলকে, বিশেষত প্রতিরক্ষা শিল্প বিষয়ক সচিবালয় (SSB) ও তুর্কি অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (TAI) কে ধন্যবাদ জানান।
ইন্দোনেশিয়ার নিজস্ব প্রযুক্তিগত সক্ষমতাও ‘কান’ (KAAN) যুদ্ধবিমান উৎপাদনে কাজে লাগানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়া দু’দেশের জন্যই এই চুক্তি কল্যাণকর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একে তিনি তুরস্কের জাতীয় ও অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা শিল্পের অগ্রগতি ও সাফল্য বলে আনন্দও প্রকাশ করেন।
টিএআই (TAI) নির্মিত ‘কান’ (KAAN) একটি ৫ম প্রজন্মের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, যা ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো আকাশে উড্ডয়ন করেছিলো। সফল উড্ডয়নে যুদ্ধবিমানটির সর্বোচ্চ গতি উঠেছিলো ২৩০ নট এবং উচ্চতায় উঠেছিলো ৮,০০০ ফুট।
টিএআই (TAI) এর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৪৮টি ‘কান’ (KAAN) ফাইটার জেটের চুক্তিটি ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অনুষ্ঠিত ‘ইন্দো ডিফেন্স-২০২৫’ এ স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১০ বছর বা ১২০ মাসের মধ্যে এসব বিমান সরবরাহ করা হবে। বিমানগুলোতে শতভাগ তুরস্কের তৈরি জেট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। এই চুক্তির আওতায় শুধু ফাইটার জেট সরবরাহ করা হবে না, বরং ইন্দোনেশিয়াকে তুর্কি অ্যারোস্পেস প্রযুক্তিও সরবরাহ করা হবে। চুক্তিটি কৌশলগত সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞান ভাগাভাগির এবং স্থানীয় প্রযুক্তি বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
তুর্কি অ্যারোস্পেস কোম্পানিটির মহাব্যবস্থাপক মেহমেত দেমিরওগ্লু এই চুক্তি প্রসঙ্গে এক্স বার্তায় বলেন, তুরস্ক এখন তার বন্ধু ও মিত্রদের জন্য একটি নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠছে। এই চুক্তিটি এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
তিনি আরো বলেন, ‘কান’ (KAAN) যুদ্ধবিমানের উত্থান তুরস্কের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, আত্মবিশ্বাস এবং প্রকৌশল সক্ষমতার প্রমাণ বহন করে।
তুরস্কের যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রী ফখরুদ্দিন আলতুন এই প্রসঙ্গে এক এক্স বার্তায় লিখেন, এই চুক্তিটি প্রতিরক্ষা শিল্পে আঙ্কারার স্বাধীনতা এবং উচ্চ প্রযুক্তিগত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি তুর্কি শতাব্দী (Century of Türkiye) ভিশনের একটি দৃশ্যমান প্রমাণ।
তিনি আরো লিখেন, এই ঐতিহাসিক সাফল্যে অবদান রাখা সব ভাইদের প্রতি আমরা হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সূত্র: আনাদোলু