ভারতে পাঞ্জাবি-পায়জামা দেখতে পেয়ে ৩ মুসলিম শ্রমিককে বেধড়ক পিটিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।
বুধবার (১১ জুন) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, গত ৬ জুন, ঝাড়খণ্ডের রাঁচির নামকুম এলাকায় ৩ মুসলিম শ্রমিককে ৩০ এর অধিক উগ্র হিন্দুত্ববাদী একটি গোষ্ঠীর লোকজন নির্মমভাবে মারধর করেছে।
ভুক্তভোগী মুসলিম ৩ শ্রমিক স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। তারা জানান, নামাজ পড়ে কাজের জায়গায় ফিরে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় তারা উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীটির লোকজনের মারধরের শিকার হোন।
তন্মধ্যে একজন বলেন, প্রথমে কয়েকজনের একটি দল তাদের কাছে এসে প্রশ্ন করতে শুরু করে, “তোমরা কারা? তোমাদের নাম কী? এখানে কী করছো? আমরা আমাদের নাম বলার পর এক পর্যায়ে তারা আমাদের কাছে পাঞ্জাবি-পায়জামা দেখতে পায় এবং আচমকাই তাদের ব্যবহার বদলে যায়।”
“যখন তারা বুঝতে পারে আমরা মুসলিম আমাদেরকে প্রথমে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। এসময় পরিস্থিতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং তাদের আরও লোকজনের আগমন ঘটে। তাদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০–৪০ জনে।
অপর ভুক্তভোগী জানান, জড়ো হওয়া হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে যিনি নেতা ছিলেন, তিনি তাদের বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিতে থাকেন এবং “জয় শ্রী রাম” বলতে জোরজবরদস্তি করতে থাকেন। তারা তা বলতে অস্বীকার করলে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে।
তন্মধ্যে মারধরের শিকার অপরজন জানান, মারধরের একপর্যায়ে তিনি কোনোরকমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। পালিয়ে গিয়ে সহকর্মীদের খবর দেন এবং সহকর্মী সহ এসে দেখতে পান যে, বাকি ২জনকে তখন গাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মারা হচ্ছে।
তিনি বলেন “অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে নিয়ে না যাওয়া হলে হয়তো ওই ২জনকে মেরেই ফেলা হতো।”
বেদম মারধরের শিকার ওই ৩ মুসলিম শ্রমিক মামলায় স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগও এনেছেন। তারা জানান, পুলিশ প্রথমে তাদের অভিযোগ আমলেই নেয়নি।রিপোর্ট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, বিশেষত ‘জয়শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করানোর অংশটি তারা বাদ দেয় বলে উল্লেখ করেন। অনেক অনুরোধ করার পর পরবর্তীতে তারা রিপোর্ট সংশোধন করে বলে জানান। কিন্তু তখন আবার তাদেরকেই মিথ্যাবাদী বলে অভিযুক্ত করা হয়।