মাহবুবুল মান্নান
টেকনাফ সদর থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার ও শাহপরীরদ্বীপ থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে ১৯৭৭ একর (৮ বর্গকিলোমিটার) এলাকাজুড়ে সেন্টমার্টিনের অবস্থান। সাগরের মাঝে তাদের অবস্থান হওয়ায় ঘূর্ণিঝড়সহ যেকোন দূর্যোগে তারা বেশি আতঙ্কে থাকেন।
গতকাল শনিবার (১৩ মে) দুপুর থেকে সাগর উত্তাল থাকায় স্থানীয় প্রসাশন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট বন্ধ করে দিয়েছে।
সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় ঝুঁকিতে থাকা সেন্টমার্টিন থেকে আর কাউকে সরিয়ে আনার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তারা বলছেন, সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় সাত হাজার মানুষের ৭ থেকে ১০ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিনে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ৩৭টি। এগুলোতে আশ্রয় নিতে পারবেন প্রায় ৭ হাজার মানুষ।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা তৈয়ব উল্লাহ জানিয়েছেন, সংকেত দেওয়ার সাথে সাথে পরিস্থিতি খারাপ হয় না। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়ের বেলা অনেক আগে থেকেই সংকেত দেওয়া হয়। যাতে মানুষ পূর্বপ্রস্তুতি নিতে পারে। তারা সাধারণ মানুষের বেশি নিরাপত্তার চিন্তা করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কেননা দ্বীপের মাত্র দুটি আশ্রকেন্দ্র, একটি হাসপাতাল ও কয়েকটি রিসোর্টের উপর নির্ভর করে এতোগুলো মানুষের জীবন বাজি রাখা চরম ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ রিসোর্টগুলো কাগজে কলমে আশ্রয়কেন্দ্র হলেও দুর্যোগ মোকাবেলায় কতোটুকু সক্ষম তা আমার জানা নেই। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যেনতেন ভাবে তৈরি রিসোর্টে আস্থা রাখা সত্যিই কঠিন! প্রশাসন সকল বহুতল রিসোর্টগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিল। এ ঘোষণার আগে কি কেউ সেগুলোর সক্ষমতা ও ঝুঁকি পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখেছে?
দ্বীপের বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, সকাল থেকে দ্বীপে বাতাসের বেগ বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় এলে দ্বীপের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটে। কেননা সাগরের মাঝে বসতি। এ ছাড়া আগের তুলনায় দ্বীপের অবস্থা ভালো না। সাগরে সামান্য পানি বাড়লে দ্বীপের চারদিকে ভেঙে যায়।
তিনি আরো জানিয়েছেন, গতরাতে তাহাজ্জুদের সময় মসজিদ থেকে মুসল্লীদের কান্নার আওয়াজ অনেক দূরে পর্যন্ত শোনা গেছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় থাকার জন্য দোতলা আর তিনতলাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যারা আশ্রয় শিবিরে উঠছেন, তারা দোতলা বা ওপরের দিকে থাকার চেষ্টা করছেন।