আফগান বিষয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিহীন যেকোনো আন্তর্জাতিক বৈঠক অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছে দেশটির ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার।
রবিবার (১৫ জুন) তলো নিউজের খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, আফগানিস্তানের মানবিক পরিস্থিতি বিষয়ে আগামীকাল জেনেভায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশন প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান নেতৃত্বাধীন ইমারাতে ইসলামিয়ার সরকার।
আফগানিস্তানের বিষয়ে দেশের প্রতিনিধি ছাড়া যেকোনো আন্তর্জাতিক বৈঠক অকার্যকর ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে দেশটির সরকার
সরকার মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন:
“আফগান প্রতিনিধিত্ব ছাড়া বিদেশে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলো আফগানিস্তানের স্বার্থে হয় না। সেগুলো কেবল মিডিয়াবাজী অনুষ্ঠান, যা কোনো কার্যকর বা উপকারী ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্দুন নাসের শফিক বলেন: “মানবাধিকারের অজুহাতে কিছু সভা আসলে কেবলমাত্র আফগানিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগের জন্যই অনুষ্ঠিত হয়। আফগানিস্তান সংক্রান্ত যেকোনো বৈঠকের গ্রহণযোগ্যতার জন্য দেশের প্রতিনিধি থাকা উচিত।
অপর এক বিশ্লেষক ইউসুফ আমিন জাজি বলেন: “এধরনের বৈঠকের কার্যকারিতা নির্ভর করে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো মানবাধিকার ও মানবিক নীতিতে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তার উপর।”
নারী অধিকার কর্মী তাফসির সিয়াহপোশ বলেন: “আমরা চাই না এসব বিষয় কেবল স্লোগান ও কথামালার পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকুক। যদি তারা সত্যিই আফগান জনগণের, বিশেষ করে নারীদের পাশে দাঁড়াতে চায়, তবে তাদের উচিত আফগান ইমারাত সরকারকে সাথে রাখা।”
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, আগামীকাল জাতিসংঘের সদরদপ্তর জেনেভায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির বিশেষ প্রতিবেদক (র্যাপোর্টিয়র) রিচার্ড বেনেটের একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি না থাকায় দেশটির সরকার কর্তৃক বৈঠকটি প্রত্যাখ্যাত হওয়া সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে যে, ৫৯তম অধিবেশনে আফগানিস্তানের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে। এতে রিচার্ড বেনেটের ম্যান্ডেট বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হবে।
সূচি অনুযায়ী, অধিবেশনের প্রথম দিন বেনেটের প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের নারী ও কিশোরীদের পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে।
আফগান ইমারাত সরকারের পূর্বের বক্তব্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বারবার বিভিন্ন ভাবে আফগানিস্তানের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ভিত্তিহীন ও একতরফা প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে, যা তাদের সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সংস্থাটির ব্যাপারে অভিযোগ আনা হয় যে, তারা আফগানিস্তানের পরিস্থিতির ব্যাপারে সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালনার সাথে যারা জড়িত তাদের শরণাপন্ন না হয়ে এবং আফগানিস্তানে না এসেই বহিরাগত বিভিন্ন জনের কথায় ও মনগড়া প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করছেন।