জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমাতাচ্যুত সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তারা সাক্ষ্য দেবেন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা সাক্ষ্য দিতে না পারায় ট্রাইব্যুনাল নতুন করে আজকের দিন নির্ধারণ করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রসিকিউটর তামিম বলেন, এই মামলায় প্রসিকিউশন ৮১ জন সাক্ষীর তালিকা ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছিল। এদের মধ্যে ৪৫ জনের সাক্ষ্য ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক পটভূমির প্রেক্ষাপট বর্ণনা করবেন এমন কয়েকজনের ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেবেন। এরপর সিজার লিস্টের সাক্ষী ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের পর আর সাক্ষ্য নেওয়া হবে না। প্রসিকিউশন মনে করে এই কয়েকজন সাক্ষীই মামলা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। এরপর আমরা যুক্তিতর্কে চলে যাব।
তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলো প্রথমেই প্রমাণ করতে হবে যে, কোনো একটি বিশেষ কারণে হত্যাকাণ্ড হয়নি। বরং ওয়াইড স্প্রেড ও সিস্টেমেটিক্যালি। অর্থাৎ এক জায়গায় সংগঠিত হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে এবং সব হত্যাকাণ্ডগুলো একই প্যাটার্নের।
এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো শুধু ২০২৪ সালের জুলাই মাসেই সংঘটিত হয়নি। এর শুরুটা হয়েছিল ২০০৯ সাল থেকেই, বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন আঙ্গিকে। এই অপরাধগুলো করা হয়েছে; যা শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে।
তামিম আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান ও নাহিদ ইসলাম বর্ণনা করবেন কীভাবে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই অপরাধগুলো সংঘটিত হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি বা ঊর্ধ্বতনের নির্দেশনার দায়ে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ৩ আগস্ট প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। শেখ হাসিনা ছাড়া মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামুন এই মামলায় দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হয়েছেন। এ পর্যন্ত ৪৫ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও কামালকে পলাতক দেখিয়ে বিচারকাজ চলছে। তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী রয়েছেন মো. আমির হোসেন।