মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর | ২০২৫

হামাসের আটক জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ধর্মঘটে উত্তাল ইসরাইল

গাজ্জায় যুদ্ধ বন্ধ ও ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে আটক সব জিম্মিকে দ্রুত মুক্ত করার দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ ও ধর্মঘট উত্তাল ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল। অক্টোবর কাউন্সিল নামে গঠিত একটি সংগঠনের নেতৃত্বে এই কর্মসূচিতে সাধারণ নাগরিক, জিম্মিদের পরিবার, নিহতদের স্বজন, শিক্ষাবিদ, বিরোধীদলীয় গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা একত্রিত হয়েছেন।

এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরাইলি গণমাধ্যম হারেৎজ।

জানা গেছে, সকাল ৬টা ২৯ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। সময়টি প্রতীকী, কারণ ওই সময়েই গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালিয়েছিল। শুরু থেকেই সারাদেশের প্রায় ৩০০ স্থানে চলছে প্রতিবাদ। উত্তরের দান থেকে দক্ষিণের এলিয়াত পর্যন্ত মহাসড়ক, রাস্তার মোড়, শহরের প্রবেশপথ ও প্রধান ট্রাফিক পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি, মিছিল ও মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

তেল আবিবে হোস্টেজ স্কোয়ারকে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু করা হয়েছে। দিনব্যাপী এই স্কোয়ারে জিম্মিদের পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকারকর্মীরা বক্তব্য রাখছেন। এর আগে, সকালে আরলোসরফ ট্রেন স্টেশন থেকে একটি বড় মিছিল সেখানে গিয়ে সমবেত হয়।

দিনব্যাপী ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন সেখানে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছে। সকাল ৭টায় জিম্মিদের স্বজনরা সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে শতশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নিজ ইচ্ছায় কাজে না যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

ইসরাইলের জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন হিস্টাড্রুট আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘটে না গেলেও, তাদের সদস্যদের এই আন্দোলনে ব্যক্তিগতভাবে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অন্তত ৯০টি পৌরসভা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গাজা সীমান্তবর্তী কিছু কিবুত্জ এবং স্থানীয় প্রশাসনিক পরিষদ সরাসরি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।

আন্দোলনের আয়োজকেরা বারবার বলছেন, এই বিক্ষোভের একমাত্র লক্ষ্য হলো, জিম্মিদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানো এবং যুদ্ধে জড়িত সেনাদের জীবন রক্ষা করা। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দাবিকে সামনে এনে বিভ্রান্ত করার জন্য নয়।

তারা বলছেন, আমরা এখানে একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে দাঁড়িয়েছি, জিম্মি ও সেনাদের জীবন রক্ষা। অন্য দাবি বা বার্তা অন্য দিনে তোলা যাবে। আজ আমরা একটাই কথা বলব, যুদ্ধ থামাও, জিম্মিদের ফেরাও।

এদিকে ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা দেশজুড়ে হাজার হাজার পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী মোতায়েন করেছে, যাতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে তারা সতর্ক করে দিয়েছে, প্রতিবাদের অধিকার থাকলেও কেউ যেন আগুন জ্বালানো, রাস্তা অবরোধ বা জনজীবন ব্যাহত না করে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু সেটা যদি সহিংস বা বিশৃঙ্খল হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

spot_img
spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img