সোমবার, মে ১৯, ২০২৫

সৌদি-ইসরাইল চুক্তি থামাতে ৭ অক্টোবর হামলা চালায় হামাস

spot_imgspot_img

ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন থামাতেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর রকেট হামলা চলায় ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সে হামলার জেরে ভয়াবহ প্রতিশোধ শুরু করে তেলআবিব। টানা বোমাবর্ষণ ও সামরিক আগ্রাসনে ৫৩ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও গাজ্জা উপত্যকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ইসরাইল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পরে গাজ্জার বিভিন্ন এলাকায় আগ্রাসনের সময় হামাস নেতাদের বৈঠকের কিছু নথি উদ্ধার করে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

রোববার (১৮ মে) মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এসব নথির বরাতে এক অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্থাপনের গতি দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন হামাসের সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। এক নথিতে সিনওয়ারের মন্তব্য ছিল, কোনো সন্দেহ নেই, সৌদি আরব ও ইহুদিবাদীদের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কাজ খুব দ্রুত এগোচ্ছে। আর এই চুক্তি হলে আরব ও ইসলামিক বিশ্বের অন্যান্য দেশ সৌদির পথ অনুসরণ করবে।

এই আশঙ্কা থেকেই হামলার সিদ্ধান্ত নেয় হামাস, যার লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে আবারও কেন্দ্রে নিয়ে আসা এবং ইসরাইলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক রুখে দেওয়া।

হামলার কয়েক মাস আগেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে বলা হচ্ছিল, আমেরিকার মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইসরাইল তাদের পারস্পরিক মতপার্থক্য কমিয়ে আনছে। সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের চুক্তিও প্রায় চূড়ান্তের পথে ছিল। ঠিক সেই সময় হামাস ইসরাইলে হামলা চালিয়ে পুরো পরিস্থিতি বদলে দেয়।

যুদ্ধ গড়িয়েছে ৫০০ দিনে। এখনো থামেনি ইসরাইলের আগ্রাসন, ফুরায়নি ফিলিস্তিনিদের রক্তঝরা। তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, হামাস তাদের কৌশলে আংশিক সফল হয়েছে। সৌদি আরব এখনো ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেনি।

সম্প্রতি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান স্পষ্ট করে বলেছেন, যতদিন গাজ্জায় যুদ্ধ বন্ধ না হচ্ছে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া শুরু না হচ্ছে, ততদিন ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের কাগজে স্বাক্ষর করব না।

আজ যখন ইতিহাস লেখা হচ্ছে, তখন স্পষ্ট—একটি আঘাত যেমন থামিয়ে দিতে পারে চুক্তির কলম, তেমনি জাগিয়ে তুলতে পারে কোটি মানুষের অধিকার, আত্মত্যাগ আর স্বাধীনতার স্বপ্ন।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img