৭ হাজারের অধিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মুসলিম অধ্যুষিত আহমেদাবাদে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে ভারত।
মঙ্গলবার (২০ মে) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, ৭ হাজারের অধিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আহমেদাবাদ নগর কর্তৃপক্ষ (AMC) আজ চন্দোলা তালাব এলাকায় এক বৃহৎ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। আকস্মিক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হওয়ার ফলে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাটির হাজার হাজার মুসলিম পরিবার তাদের আশ্রয় ও জিনিসপত্র রক্ষার জন্য হিমশিম খেতে শুরু করেছে।
ঘটনাটি মানবাধিকার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর মাঝে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ এতে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছে।
প্রশাসনের দাবী, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই বৃহৎ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ২৬ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে হামলার পরে এই এলাকা বাংলাদেশি অভিবাসীরা অবৈধভাবে দখল করেছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে প্রায় ৬,৫০০ জনকে পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য আটক করা হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই মুসলিম।
মানবাধিকার কর্মীদের দাবী করছেন, আটককৃতদের অধিকাংশই ভারতীয় নাগরিক, বাংলাদেশী নয়। তাদের কাছে আধার কার্ড, ভোটার আইডি ইত্যাদি বৈধ কাগজপত্র রয়েছে।
নতুন করে শুরু হওয়া এই উচ্ছেদ অভিযান ভিত্তি পায় ২৯ এপ্রিলে দেওয়া গুজরাট হাইকোর্টের রায়ে। যেখানে আগের রায় বহাল রেখে বলা হয়েছিলো, চন্দোলা লেক এলাকার স্থাপনা অবৈধ।
এর আগের দিন ২৮ এপ্রিল সিয়াসতনগর ও বেঙ্গলি বাস এলাকায় ৪ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে মূলত রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিক ও ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহকারীরা বাস করতেন।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, সরকার আইন ও নিরাপত্তার অজুহাতে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু করছে। মাইনরিটি কোঅর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক মুজাহিদ নাফিস এই পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ অমানবিক।বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, “প্রশাসন পেহেলগাঁও হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে গণহারে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে। অথচ লোকজন ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে বসবাস করছে।”
জামাতে ইসলামী হিন্দ গুজরাট শাখার ওয়াসিফ হুসেইন বলেন, “সরকার বিকল্প আশ্রয়ের ব্যবস্থা না করেই ঘরবাড়ি ভেঙে দিচ্ছে। “বৃদ্ধ ও শিশুরা প্রচণ্ড গরমে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। তাদের কোনো আশ্রয় নেই।”
মানবাধিকার কর্মীরা সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অবিলম্বে পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছেন।