বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র রুট হরমুজ প্রণালী বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম প্রেস টিভির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাকে এখন এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে।
এবার, মধ্যপ্রাচ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র রুটটি খোলা রাখার বিষয়ে চীনের সাহায্য চেয়েছে আমেরিকা। ওয়াশিংটন বলেছে— তেহরান যেন এই গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ বন্ধ না করে, সেজন্য বেইজিং যেন আলোচনায় এগিয়ে আসে।
রোববার (২২ জুন) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে এ কথা জানিয়েছেন। বিবিসি এ তথ্য দিয়েছে।
রুবিও বলেন, ‘যারা হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল পরিবহনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, সেই চীনের সরকারকে আমি উৎসাহিত করবো তারা যেন এ বিষয়ে যোগাযোগ করে।’
হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা ইরানের জন্য আরেকটি ভয়াবহ ভুল বলে অভিহিত করেছেন তিনি। ইরানের জন্য এটি ‘অর্থনৈতিক আত্মহত্যা’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন রুবিও।
উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালী বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল একটি সমুদ্রপথ। এটি পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত। প্রণালীটির প্রস্থ খুব বেশি নয়—সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গায় মাত্র ৩৯ কিলোমিটার, যার মধ্যে কেবলমাত্র দুটি সংকীর্ণ চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে। তবে ছোট এই পানিপথ দিয়েই প্রতিদিন বিশ্বের মোট সমুদ্রপথে পরিবাহিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ যাতায়াত করে, যা একে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
হরমুজ প্রণালী দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হুমকির জবাবে ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে যে তারা হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে, যা গোটা বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে। অপরদিকে, আমেরিকা ও তার মিত্ররা বারবার এই প্রণালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।