শনিবার | ২৩ আগস্ট | ২০২৫
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

তালেবানকে বাদ দিয়ে আফগান বিষয় সংলাপের আয়োজন পাকিস্তানে; শেষমেশ স্থগিত

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য কথিত আফগান সংলাপ স্থগিত করা হয়েছে। আয়োজকরা শুক্রবার রাতে জানিয়েছে, এ আয়োজন এখন সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আয়োজনটি আগে ২৫–২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তবে তা পরিবর্তন করে সেপ্টেম্বরে শেষ সপ্তাহে নেওয়া হয়েছে।

দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনের নাম রাখা হয়েছিল “ঐক্য ও আস্থার পথে”। আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ এশিয়া কৌশলগত স্থিতিশীলতা ইনস্টিটিউট। তাদের দাবি, সময় পরিবর্তনের ফলে ‘আরও গভীর ও বিস্তারিত’ আলোচনা করা সম্ভব হবে।

ঘোষণা অনুযায়ী, বৈঠকে অংশ নেবেন কিছু রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের সদস্য, নারী অধিকার কর্মী ও সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু বৈঠকে আফগানিস্তানের একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ তালেবানের নেতৃত্বাধীন সরকারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ দেশের স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার নিয়ে আলোচনার পূর্ণ অধিকার কেবল বৈধ সরকারেরই রয়েছে। ফলে এ আয়োজনের উদ্দেশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

এ সংলাপ নিয়ে সমালোচনা করেছেন আমেরিকার সাবেক আফগান শান্তি প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ। তিনি দাবি করেছেন, আয়োজনের সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর যোগসূত্র রয়েছে।

জালমে খলিলজাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, অংশগ্রহণকারীদের অধিকার আছে তাদের বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলার এবং আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “আইএসআই কখনোই স্বাধীন, মুক্ত, ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী আফগানিস্তানের পক্ষে নয়, বরং এর বিপরীত। আফগানিস্তানে তাদের অতীত রেকর্ড দেখুন, পাকিস্তানে কী করছে সেটাও দেখুন।”

খলিলজাদ জানান, স্বচ্ছতার অভাবের কারণে কয়েকজন আফগান প্রতিনিধি ইতোমধ্যে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এ আয়োজনের অর্থায়ন করছে কারা এবং অংশগ্রহণকারীরা আদৌ উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত কি না।

তিনি স্পষ্ট ভাষায় আহ্বান জানান, “দেশপ্রেমিক আফগানদের উচিত নয় এ ধরনের কলঙ্কিত প্ল্যাটফর্মে অংশ নেওয়া। আপনারা নিজেরা স্বতন্ত্রভাবে, অন্য কোথাও আয়োজন করুন। আমি বিশ্বাস করি না যে আপনারা কপালে আইএসআই-এর ছাপ নিতে চাইবেন।”

এ বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকত আলী খান শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, সরকারের এ আয়োজনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, “এটি একটি থিঙ্ক ট্যাংক যারা এ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি প্রকাশ্য আয়োজন, গোপন কোনো কার্যক্রম নয়। যেহেতু এটি থিঙ্ক ট্যাংকের আয়োজন, তাই একে রাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।”

তিনি অভিযোগ করেন, সামাজিক মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করেছে।

দক্ষিণ এশিয়া কৌশলগত স্থিতিশীলতা ইনস্টিটিউট-এর চেয়ারপারসন মারিয়া সুলতান বলেছেন, সংলাপের উদ্দেশ্য হলো শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা। আয়োজকেরা দাবি করেছে, এ বৈঠক তালেবানের বিরুদ্ধে নয়, বরং আফগানিস্তান ও অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য আয়োজন করা হয়েছে।

তবে তিনি স্বীকার করেছেন, তালেবান ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রথম ধাপের আলোচনায় ডাকা হয়নি। তিনি আরও জানান, বৈঠকটি দুই দিনব্যাপী বন্ধ দরজার আলোচনার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ উদ্যোগকে তিনি নাম দিয়েছেন “ইসলামাবাদ প্রক্রিয়া”।

বাস্তবতা হলো, আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার বৈধ কর্তৃত্ব একমাত্র তালেবানের নেতৃত্বাধীন সরকারের হাতেই ন্যস্ত। তালেবান সরকার ছাড়া কোনো সংলাপই আফগান জাতির বৈধ প্রতিনিধিত্ব করে না।

সূত্র : আরিয়ানা নিউজ

এম মাহিরজান
এম মাহিরজান
বিশেষ প্রতিনিধি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles