বৃহস্পতিবার | ২৫ ডিসেম্বর | ২০২৫
spot_img

হামাস শীর্ষ নেতা জাওয়ারি হত্যাকাণ্ড মামলার রায় দিলো তিউনিসিয়া

ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের শীর্ষ সামরিক নেতা মুহাম্মদ আল জাওয়ারি হত্যাকাণ্ড মামলার ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে তিউনিসিয়া।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাসের শীর্ষ সামরিক নেতা জাওয়ারি হত্যাকাণ্ড মামলার ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে তিউনিসিয়ার আদালত।

মঙ্গলবার দেশটির একটি আদালত এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করে।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, তিউনিসীয় ও বিদেশী নাগরিক সহ মোট ১১ অপরাধীর প্রত্যেককে শতাধিক বছরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

তিউনিসিয়ার নাগরিক মুহাম্মদ আল জাওয়ারি হামাসের প্রভাবশালী ও শীর্ষ সামরিক নেতা ছিলেন। তিনি হামাসের সামরিক শাখা কাসসামকে ড্রোন প্রযুক্তির অধিকারী হয়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার হাত ধরেই গঠিত হয়েছিলো সংগঠনটির ড্রোন ইউনিট। ২০১৪ এর হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে ‘আবাবিল ১’ সহ যেসব ড্রোন অবৈধ রাষ্ট্রটি সহ পুরো বিশ্বকে হতবাক করে দেয়, তা তার ফর্মুলা ও তত্ত্বাবধানেই নির্মিত হয়েছিলো।

এই গুণী ও প্রভাবশালী সামরিক ব্যক্তিত্ব ১৯৬৭ সনে জন্মগ্রহণ করেন এবং স্ফ্যাক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর উচ্চতর পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বরে নিজ শহর স্ফ্যাক্সে বাড়ির বাইরে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হোন।

তিউনিসিয়ার মতো রাষ্ট্রে এমন হত্যাকাণ্ড তখন পুরো আরব অঞ্চলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলো। এতে ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সংশ্লিষ্টতা ও দেশে তাদের অবাধ পদচারণা রয়েছে বলেও গুঞ্জন শুরু হয়।

ড্রোন ও উন্নত রকেট প্রযুক্তির জন্য ফিলিস্তিনের প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিরোধের প্রতীকে পরিণত হওয়া এই ব্যক্তিত্ব ২০০০ সনে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পর হামাসে যোগ দিয়েছিলেন।

তার শাহাদাত পরবর্তী হামাসের প্রকাশিত বিবৃতিগুলোতে বলা হয়েছিলো যে, জাওয়ারির গুরুত্ব কেবল তার প্রযুক্তিগত দক্ষতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তিনি প্রকৌশল জ্ঞানকে কার্যকর সামরিক সক্ষমতায় রূপ দিতে পেরেছিলেন।

কাসসাম ব্রিগেডও প্রথমবারের মতো সংগঠনে তার ভূমিকা কি ছিলো তা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলো। তার শাহাদাতকে ‘স্বাধীনতার ড্রোনের শাহাদাত’ বলে আখ্যায়িত করেছিলো। এছাড়াও বলেছিলো যে, তার শাহাদাত হামাসের সামরিক শাখার জন্য একটি বড় ক্ষতি।

হামাসের সামরিক শাখাটি এই প্রভাবশালী নেতা ও সামরিক ব্যক্তিত্বের সম্মানে একটি আত্মঘাতী ড্রোন ও একটি মানববিহীন সাবমেরিনেরও নামকরণ করেছে।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, যদিও মুহাম্মদ আল জাওয়ারি হত্যাকাণ্ডের সব আসামি এখনও পলাতক, তবুও এই রায়টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক বিচারিক অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

spot_img
spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img