২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশি বর্বরতায় সরাসরি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল বলে মন্তব্য করেছে আমেরিকা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এছাড়া গত বছরের ওই আন্দোলনের সময় পুলিশের ভূমিকা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের চেয়ে রাজনৈতিক নেতারা বেশি নির্ধারণ করে দিতেন বলেও রিপোর্টে উঠে এসেছে।
এমনকি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হওয়া শক্তিশালী এবং রাজনৈতিক নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে অন্তর্র্বতী সরকার লড়াই করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া ডিরেক্টর ইলেইন পিয়ারসন বলেছেন, “গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে প্রায় ১০০০ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এটি বাংলাদেশে অধিকার-সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সুযোগের সূচনা করেছে। কঠিন এই লড়াইয়ে জয়ের মাধ্যমে অর্জন করা সব অগ্রগতি হারিয়ে যেতে পারে যদি অন্তর্র্বতী সরকার দ্রুত এবং কাঠামোগত সংস্কার না করে। কাঠামোগত এমন সংস্কার করতে হবে যা ভবিষ্যত সরকারের যেকোনও দমন-পীড়নকে প্রতিরোধ করতে পারে।”
“আফটার দ্য মনসুন রেভোলিউশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ” শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে যে— অতীতে কীভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
একজন অফিসার বলেছেন, “ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদেরকে কঠোর হতে এবং ‘নৈরাজ্য ছড়ানো কোনও অপরাধী’কে রেহাই না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারা স্পষ্টভাবে ‘গুলি করো’ শব্দটি ব্যবহার করেননি, তবে তাদের নির্দেশাবলী স্পষ্ট ছিল: সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করুন, আপনি যা প্রয়োজন মনে করেন তা করুন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিন।”
তিনি এইচআরডব্লিউকে বলেন, আন্দোলনের সময়কার হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন, যিনি জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে তিনি বুঝতে পেরেছেন।
অন্য একজন বলেছেন, “আমি অফিসারদের আন্দোলনকারীদের অত্যাবশ্যক ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখেছি অনেক ক্ষেত্রে, অফিসারদের জীবন বিপদে না থাকলেও আমি তাদেরকে তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার ও গুলিবর্ষণ করতে দেখেছি।”
এদিকে বলপূর্বক গুমের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা এইচআরডব্লিউকে আরও বলেছেন, হাসিনা বা তার সরকারের সিনিয়র সদস্যরা এই ধরনের অসংলগ্ন আটকের বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং কিছু ক্ষেত্রে হাসিনা সরাসরি বলপূর্বক গুম বা হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।











