দেশের জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে যেকোনো সময় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি মূল ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কাজ করছে। সেগুলো হলো, সংস্কার, হত্যাকারীদের বিচার এবং একটি সাধারণ নির্বাচন।
বুধবার (২৮ মে) অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফিংয়ে বলেন, অধ্যাপক ইউনূস ছয় মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন এবং সেই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেস সচিব বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথেই অধ্যাপক ড. ইউনূস জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবেন। জাপানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু তারো আসো বাংলাদেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অধ্যাপক ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান এবং একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য একটি সাধারণ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ঋণ পরিশোধে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগের সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তরুণদের এর বিরুদ্ধে জেগে উঠতে বাধ্য করেছে। যে জগাখিচুড়ি তৈরি হয়েছে, তা ঠিক করার জন্য তরুণরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১০ মাসে জাপান আমাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমি জাপানকে তার সমর্থনের জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি এক অর্থে ধন্যবাদ সফর। প্রফেসর ইউনূস পরিবর্তনগুলো স্বচক্ষে দেখার জন্য আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে আসো’র সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন জাপানি আইনপ্রণেতা বলেন, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে।
আগস্টের মধ্যে আলোচনা শেষ করে সেপ্টেম্বরে চুক্তি সই করবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। চুক্তি সই হলে জাপানই হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ করা প্রথম দেশ।
প্রধান উপদেষ্টা জাপানের আইনপ্রণেতাদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের এজেন্ডা এগিয়ে নিতে তাদের সমর্থন কামনা করেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বের অন্যান্য শরণার্থী সংকট থেকে আলাদা, কারণ তারা তাদের বাড়ি ছাড়া অন্য কোনও দেশে যাওয়ার জন্য ভিক্ষা করছে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সেক্রেটারি লামিয়া মোরশেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।