বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি আছেন। তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমন পরিস্থিতিতে তার ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
খালেদা জিয়া ফুসফুসে সংক্রমণ থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর দেখা দেয় নিউমোনিয়া। এর সঙ্গে রয়েছে কিডনি, লিভার ও ডায়াবেটিসের পুরনো সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাকে ‘অত্যন্ত সংকটময়’ বলে উল্লেখ করেছেন মির্জা ফখরুল।
অন্যান্য নেতারা বলছেন, গত দুই দিনে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্ভব হলে দ্রুত সিঙ্গাপুরে নেওয়ার চিন্তা করছেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় দ্রুতই তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারেন। দলীয় সূত্রগুলো থেকে এ আভাস পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, বর্তমান সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষার কথাও জানিয়েছেন তারেক রহমান।
এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, এমন সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোন সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সকলের মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
তিনি এই স্পর্শকাতর বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার সুযোগ সীমিত বলে উল্লেখ করেন। তবে রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে তার এই প্রত্যাশা পূরণে দেরি হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত দেন।
তবে, তিনি ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান সার্বক্ষণিক খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখছেন।
জুবাইদা রহমান খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য। ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান ও খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারও হাসপাতালে আছেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি রাতে আবারও দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও সেখানে ভিড় জমান।
আগামী ডিসেম্বর মাসের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। সে সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাব্য তারিখ আলোচনায় ছিল।
তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে- বিএনপির এমন নেতারা বলছেন, তারেক রহমানের এমন পরিকল্পনা ছিল যে পবিত্র ওমরাহর জন্য সৌদি আরবে যাবেন তিনি। এরপর সরাসরি লন্ডন থেকে ঢাকায় আসবেন।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৭ বছর পর দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতার প্রত্যাবর্তন ঘিরে আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী তার নিরাপত্তা, বাসভবন সংস্কার, অফিস সজ্জাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ মায়ের গুরুতর অসুস্থতা এসব পরিকল্পনা পাল্টে দিতে পারে এবং দ্রুতই তাকে দেশে ফিরতে হতে পারে।
