রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কারা নির্যাতিত আলেম মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানীর নির্মিতব্য বাড়ির সামনে এক ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোমবার সকালে বোমা হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন আইডি ও পেইজ থেকে দাবি করা হয়, তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন এবং অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানীর দেওয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ইনসাফ ঘটনাটি নিয়ে খবর প্রকাশ করে। তবে পরবর্তী যাচাই, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য এবং ঘটনাস্থলের ফুটেজ পর্যালোচনায় ঘটনাটি বোমা হামলা নয়, শিশুদের পটকা ফোটানোর ঘটনা বলে প্রতীয়মান হয়েছে বলে জানিয়েছে গবেষণামূলক অনুসন্ধানভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম দ্য ডিসেন্ট।
দ্য ডিসেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ধানমন্ডী রিভার ভিউ মডেল টাউনের ভিতরে বারৈখালী তেরো নম্বর রোডে রহমানীর নির্মিতব্য বাড়ির সামনে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে শব্দ হয়।
পটকা ফোটার পর হাজারীবাগ থানা পুলিশ, ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এবং বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট পটকার অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করে।
দ্য ডিসেন্ট জানায়, ঘটনার সময় কাছেই থাকা স্থানীয় এক শিশু বলে, এটি ছিল স্পাইডার বোম বা চকলেট বোম ধরনের পটকা। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এক কিশোর পটকাটি জ্বালিয়ে রাস্তায় ছুড়ে দেয় এবং এরপর জোরে শব্দ হয়। শিশুটি আরও বলে, ঘটনাটি খেলাচ্ছলেই ঘটেছে, কারও গায়ে লাগেনি, কেউ আহতও হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যায়, নীল শীতের জামা পরা অবস্থায় মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানী লাঠি হাতে বাড়ির সামনে হাঁটছিলেন। কয়েক ফুট দূরে বালির ছোট স্তুপের ওপর একটি পটকা রাখা হয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ফোটে। শব্দের সঙ্গে রহমানীকে কেঁপে উঠতে দেখা গেলেও আশেপাশে চলাচলকারী নারী, পুরুষ ও শিশুরা ফুটেজে স্বাভাবিকভাবেই দৃশ্যমান ছিল। সরেজমিনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রহমানীর অবস্থান ও পটকা ফোটার স্থানের দূরত্ব কমপক্ষে বিশ ফুটের মতো।
দ্য ডিসেন্টকে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এটিকে বোমা হামলা বলার সুযোগ নেই। পুলিশের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এটি ককটেল বা বোমা নয়, পটকা ফুটানোর ঘটনা বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। উদ্ধারকৃত অংশ পরীক্ষা করে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ঘটনার বিষয়ে দ্য ডিসেন্টকে মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানী সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, এর পেছনে চাঁদাবাজদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। তিনি জানান, বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে আগে চাঁদা চাওয়া এবং স্থানীয়ভাবে উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছিল। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, শাহবাগ এলাকায় জুমা পড়ানো এবং ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবির জেরে কেউ তাকে ভয় দেখাতে চাইতে পারে। তবে এসব অভিযোগ এখনো যাচাই সাপেক্ষ।
ইনসাফ স্পষ্ট করছে, সোমবার প্রকাশিত খবরটি ছিল প্রাথমিক তথ্য এবং মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানীর দেওয়া বক্তব্যের ভিত্তিতে। পরবর্তী দ্য ডিসেন্টের অনুসন্ধান, ফুটেজ এবং পুলিশের প্রাথমিক যাচাইয়ের তথ্য অনুযায়ী ঘটনাটি বোমা হামলা নয়, শিশুদের পটকা ফোটানোর ঘটনা বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। নতুন তথ্যের আলোকে পাঠকের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করতেই এই আপডেটেড প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।
সূত্র : দ্য ডিসেন্ট











