লেবাননের ইরানপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলো আরব লীগ।
শনিবার (২৯ জুন) রাজধানী বৈরুতে এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, লেবানন সংকট কাটিয়ে উঠতে গত মঙ্গলবার বৈঠকে বসে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর জোট সংস্থা আরব লীগ। এতে ইসরাইল-লেবানন সামরিক উত্তেজনা নিরসন ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি থাকা রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়। সংকট থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে হিজবুল্লাহর সাথে দূরত্ব কমিয়ে আনার প্রতি জোর দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা থেকে ফিরে আসার।
আরব লীগ মহাসচিব হোসাম জাকি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইতোপূর্বে হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলো আরব লীগ, যা প্রতিফলিত হয় রেজুলেশনে। এটি আরব লীগকে দলটির সাথে বিচ্ছিন্নতার দিকে পরিচালিত করে। এবারের বৈঠকে সদস্য রাষ্ট্রগুলো দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দেওয়া বন্ধে নিজেদের সম্মতির কথা জানায়। একমত হয় যে, হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, আরব লীগ সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা বানানোর কোনো সংস্থা নয়। সক্রিয়ভাবে সত্ত্বা নির্ধারণের চেষ্টাও করে না।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এবারের লেবানন সফরে আরব লীগ মহাসচিব জাকি দেশটির রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন স্তরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক করেন ইরানপন্থী হিজবুল্লাহর সাথে যুক্ত প্রতিরোধ ব্লকের প্রধান মুহাম্মদ রা’দের সাথে, গত ১ দশকে যা দলটির সাথে আরব লীগের প্রথম বৈঠক।
ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজ্জায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা শুরু করলে স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরাইলের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা শুরু করে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। এতে করে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল বা দখলকৃত ফিলিস্তিন সংলগ্ন লেবানন সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এমনকি এপ্রিলে দেশটির অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে সশস্ত্র সংগঠনটির এলিট ফোর্সের বিগ্রেডিয়ার পর্যায়ের শীর্ষ কমান্ডার আলি আহমদ হুসাইনকে হত্যা করে।
সম্প্রতি দেশটি দখলে সামরিক হামলার পরিকল্পনা প্রকাশ করে ইহুদিবাদী অবৈধ রাষ্ট্রটির রক্ত খেকো প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, যা বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ ও নিন্দার জন্ম দেয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইসরাইলের এমন পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মুসলিম বিশ্বের সকলকে লেবাননের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহবান জানান। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র সৌদি আরবও এবিষয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানায়। ইসরাইলকে হামলার পরিকল্পনা থেকে ফিরে আসার আহবান জানায়।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর











