জাপান সরকার সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র যখন সিরিয়ার ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে তুলে নিচ্ছে, তখন এই পদক্ষেপে জাপানও অংশ নিল।
জাপানের মন্ত্রিসভা শুক্রবার (৩১ মে) তাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। জাপানি সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চারটি ব্যাংককে নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং এসব ব্যাংকের ওপর আরোপিত সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিসভার সচিব হায়াশি ইয়োশিমাসা সাংবাদিকদের বলেন, “সরকার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করার পর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “সিরিয়ায় ইতিবাচক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা এবং বহু বছরের সংকটে ক্লান্ত জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করাই এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি। জাপান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে।”
তিনি বলেন, “জাপান জি-৭ দেশ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সিরিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।”
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, নিষেধাজ্ঞা তালিকা থেকে যেসব ব্যাংক বাদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো—ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক, পাবলিক ক্রেডিট ব্যাংক, সেভিং ব্যাংক এবং কোঅপারেটিভ অ্যাগ্রিকালচারাল ব্যাংক।
জাপানের এই পদক্ষেপের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “জাতীয় চারটি ব্যাংকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা এবং সম্পদ জব্দ প্রত্যাহার একটি ইতিবাচক অগ্রগতি, যা দেশের পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই সিদ্ধান্ত পারস্পরিক সম্মান ও যৌথ স্বার্থের ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে আমরা আশা করি।”
এর আগে সিরিয়ার অস্থায়ী সরকার বহুবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা যুদ্ধ ও দুর্নীতিতে বিধ্বস্ত রাষ্ট্রের পুনর্গঠনে সহায়তার অংশ হিসেবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তাঁর পিতা হাফিজ আল-আসাদের শাসনামলে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক দুর্নীতি ও ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে।
২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের পর বিরোধী গোষ্ঠীগুলো রাজধানী দামেস্কসহ অন্যান্য শহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। তখন থেকে সিরিয়ার নতুন প্রশাসন পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সক্রিয় হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে, যা দেশটির সিরিয়া বিষয়ক নীতিতে এক বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রতিফলন।
সূত্র: আল জাজিরা