Home Blog Page 4625

সাংবাদিকতা চর্চার তিনটি মৌলিক উদ্দেশ্য

0

মাওলানা খালেদুজ্জামান | মুহাদ্দিস জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া মাদরাসা, মুহাম্মাদপুর ও বিভাগীয় সম্পাদক, মাসিক মদীনা


১. নিজ ধর্ম ও বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে শক্তিশালী সংস্কৃতি ও সভ্যতার বলয় তৈরী করা। শুধু বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সরবরাহ করা সাংবাদিকের একমাত্র লক্ষ্য উদ্দেশ্য নয়। বরং এটা নৈতিক দায়িত্ব। ধর্মভিত্তিক সঠিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছাড়া সাংবাদিকতা চর্চা ক্রমান্বয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বস্তুবাদী বিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছাড়া সাংবাদিকতা চর্চা করার কারণে অনেক বিশ্বাসী মানুষও অনেক সময় বস্তুবাদী চিন্তা চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হন। সঠিক গাইড লাইন না থাকলে অনেকে নাস্তিকও হয়ে যায়। এজন্য প্রত্যেক সাংবাদিকের জন্য যথার্থ অর্থে একজন উপদেষ্টা থাকা একান্ত প্রয়োজন।

একই সংবাদ সাংবাদিকের বিশ্বাসে বৈচিত্র্য থাকার কারণে সংবাদ শিরোনামও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়। উদাহরণ স্বরূপ গাড়ী এক্সিডেন্টে বহু যাত্রী হতাহত হওয়ার সংবাদ শিরোনাম হয় “সড়ক দূর্ঘটনায় অকালে ঝরে পড়ল বিশটি তরতাজা প্রাণ।” পক্ষান্তরে বিশ্বাসী সাংবাদিক এর শিরোনাম করেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে বিশজন।” অবিশ্বাসী সাংবাদিক শিরোনাম করে, “তিনি করোনা মোকাবেলা করে অবশেষে হেরে গেলেন বা হার মানলেন।” আর বিশ্বাসী সাংবাদিক শিরোনাম করে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মোটকথা “নিজের ধর্মভিত্তিক বিশ্বাস প্রসারের জন্য সাংবাদিকতা, সাংবাদিকতার জন্য বিশ্বাস নয়।”

২. নিজেদের পরিভাষা তৈরি ও সংরক্ষণ করা। ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে জাতি ভাষা নিয়ন্ত্রণ করে তারাই বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করে। বা যারা বিশ্ব শাসন করে তারাই ভাষা শাসন করে। ইসলাম যখন গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল এবং প্রবল প্রতাপে বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ দখল করল তখন তারা অসংখ্য নতুন ভাষা ও পরিভাষা সৃষ্টি করেছে। ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বে পৃথিবী সালাত, সিয়াম, হজ্ব, যাকাতসহ সহস্রাধিক ইসলামিক পরিভাষার সঙ্গে পরিচিত ছিল না। গোটা পৃথিবীতে মুসলমানরাই এই পরিভাষাগুলো পরিচিত করেছে। যেমন আমেরিকা আজ সারা বিশ্বে এইচ, আই, ভি, নভেল করোনা, বিভিন্ন গ্যালাক্সি ও গ্রহের নামকরণ করছে।

সুতরাং ভাষা শাসন করা বা নিয়ন্ত্রণ করার সঙ্গে বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করার এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এজন্য নিজেদের ঐতিহ্যপূর্ণ ভাষা ও শব্দ ভান্ডার সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুন পরিভাষা ও শব্দ সৃষ্টি করাও সাংবাদিকতা চর্চার একটি মৌলিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য। বাম সাংবাদিকরা অত্যন্ত গভীর ষড়যন্ত্র করে ‘আবহাওয়া’ জাতীয় মুসলমানদের আরবি ফার্সি শব্দগুলো পরিবর্তন করে বাবুদের ‘জলবায়ু’ শব্দ দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছে।

একটি ছোট শিক্ষনীয় ঘটনা। ঢালকানগর মাদরাসায় শিক্ষানবিস থাকাকালীন প্রতিদিনের রুটিন অনুযায়ী বাদ আসর মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. এর সান্নিধ্যে গিয়েছি। বাসায় ঢুকে দেখি সোফায় বসে ‘দৈনিক নয়া দিগন্ত’ পড়ছেন। হুযুর পত্রিকার একটি কলাম দেখিয়ে আমার হাতে দিয়ে বললেন, এই কলামটা পড়। আমি কলামটা পড়ে পত্রিকা রেখে দেয়ার পর হুযুর জিজ্ঞেস করলেন, কি বুঝলে? আমি সাদামাটাভাবে সংবাদের খোলাসা বললাম। হুযুর বললেন, কিছুই বোঝার নাই।

সংবাদটা ছিলো, জনৈক সাংবাদিক হাইকোর্টে রিট করেছে “আদালতে বাংলা ভাষা ব্যবহার হয় পঞ্চাশ শতাংশ। আদালতে একশো ভাগ পরিপূর্ণ বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।” হুযুর বললেন এইসব বাম সাংবাদিক কলিকাতার বাবুদের বিশ্বস্ত ভৃত্যরা ইসলাম, মুসলমান বা ভারতবর্ষের মুসলমানদের ন্যূনতম ঐতিহ্য সহ্য করতে পারে না। এরা বাংলাভাষার স্বকীয়তা রক্ষার নামে শতাব্দীকাল ব্যাপী চলে আসা প্রচলিত আরবি ফার্সি উর্দু শব্দের বিরুদ্ধে যেমন সোচ্চার, এর বিপরিতে ঠিক এরাই আবার বাংলাভাষার সঙ্গে ইংরেজি মিশিয়ে ভাষার স্বকীয়তা নষ্ট করে জগাখিচুড়ি মার্কা ভাষা সৃষ্টি করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ইসলাম বিদ্বেষী এই বাম সাংবাদিকতা রুখতে সঠিক ধারার বিশ্বাসীদের সাংবাদিকতা চর্চার কোনো বিকল্প নেই।

৩. সাংবাদিককে জাতির বিবেক বলা হয়। বলাবাহুল্য সেটা অবশ্যই বস্তু নিষ্ঠ সাংবাদিক। বস্তনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য পেশাদারিত্ব দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। আদর্শ ও পেশাদার সাংবাদিক যেমন জাতির বিবেক তদ্রূপ আত্মবিকৃত ও লেজুড়বৃত্তিক সাংবাদিকতা জাতির ক্যান্সার তুল্য। এজন্য সাংবাদিকতা চর্চার তৃতীয় মৌলিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য হলো, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করা।

পরিশেষে আমার মনে হয়, এই তিনটি মৌলিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়েই দেশের প্রথমধারার ইসলামী অনলাইন পত্রিকা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ইনসাফ গতানুগতিক ধারার বাইরে নিজেদের স্থির একটি লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়েই যাত্রা আরম্ভ করে। ইনসাফ তার অভীষ্ট লক্ষ্য পানে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলুক। উত্তরোত্তর সফলতার শীর্ষে উত্তীর্ণ হোক এই দোয়া করি। সেই সঙ্গে ইনসাফের দক্ষ ও কর্মঠ সম্পাদক সাইয়েদ মাহফুজ খন্দকার ভাইয়ের সুস্থতাসহ দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করছি।

সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ইনসাফের অগ্রযাত্রা আরও গতিময় হোক

0

মুহাম্মাদ এহসানুল হক | শিক্ষক, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া ও সহকারী সম্পাদক, মাসিক রাহমানী পয়গাম


বর্তমান সময়টা প্রযুক্তি নির্ভর। মানুষের সব প্রয়োজন এখন অনলাইনেই পূরণ হয়। করোনা পরবর্তী বিশ্বে এই নির্ভরতা হয়তো আরও বাড়বে। সংবাদ মাধ্যম হিসেবে প্রিন্ট মিডিয়ার জায়গাও এখন দখলে নিচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যমগুলো। অনলাইল পত্রিকার চাহিদাও বাড়ছে দিন দিন।

সত্যকে জানার এবং সত্যের পক্ষে লড়াইয়ে মিডিয়ার কোন বিকল্প নেই। মিডিয়ার প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার না করলেও বাস্তবতা হলো, মিডিয়া জগতে ইসলামপন্থীদের কোন বন্ধু নেই। ইসলাম ও আলেম উলামাদের পক্ষে ভূমিকা রাখার মতো গণমাধ্যম নেই। এটা অনেক বড় শূণ্যতা। দুঃখজনক হলেও সত্য এই শূন্যতা পূরণে কার্যকর কোন উদ্যোগও কখনো নেয়া হয়নি।

এমন সংকট মোকাবেলা করেও সাধ্যের সবটুকু দিয়ে ইসলামপন্থীদের পক্ষে যারা ভুমিকা রাখছে তার মধ্যে প্রধানতম হলো, ইনসাফ। দেশের হক্কানী উলামায়ে কেরামের পক্ষে, এবং যে কোন বাতিল বিরোধী আন্দোলনে ইনসাফের ভুমিকা সবসময়ই বলিষ্ঠ। এটা আমার ভালো লাগার কারণ।

ইনসাফ অর্ধযুগ পার করেছে। একটি ইসলামি পত্রিকা এতদিন টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ইনসাফ সেটা সফলতার সাথেই করতে পেরেছে। সেজন্য তাদের পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলি, লেখক, পাঠক সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ইনসাফের অগ্রযাত্রা আরও গতিময় হোক এই কামনা করি।

ইনসাফের শুভক্ষণে-শুভকামনা

0

জিয়াউল আশরাফ | নির্বাহী সম্পাদক : জাতীয় শিশু-কিশোর পত্রিকা মাসিক নকীব


ছোটবেলা থেকেই পত্রিকা পড়ার প্রতি একটা নেশা ছিলো। সে সময়ে কয়েকটি মাসিক ও দুটি সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো আমাদের। আমাদের বলতে ইসলামী ধারার, যে পত্রিকাগুলো আমাদের কথা বলতো। কিন্তু কোন দৈনিক নেই! কিংবা অনলাইন পত্রিকাও ছিলো না। সংবাদ পড়ার তুমুল আগ্রহ। তাজা নিউজ পড়ার একটি তীব্র তৃঞ্চা। কিন্তু তাজা নিউজ পড়ার কোন মাধ্যম ছিলো না। বাসি নিউজ পড়েই তৃঞ্চা নিবারণ করতাম।

এখন সময় বদলেছে- আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমাদের অনেক পত্রিকা। আছে শক্তিশালী অনলাইন। যে অনলাইন থেকে নিয়মিত পাচ্ছি টাটকা খবরাখবর।

এই তাজা নিউজ পড়তে পারা বা তৃঞ্চা নিবারণে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসে ইনসাফ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ইসলামিক অঙ্গনে সর্বপ্রথম নিউজ পোর্টাল। ইনসাফ টোয়েন্টিফোর ডটকম- জন্ম থেকেই তারা বস্তুনিষ্ট নিউজ করে আসছে। সাহসের সাথে তুলে আনছে সমাজের অন্যায়-অবিচারের সকলখবর। অসংগতিগুলো বিশ্লেষণ করছে সময়ের আয়নায়। প্রতিদিন তুলে ধরছে আমাদের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির চিত্র। দক্ষতার সাথে চিত্রায়িত করছে আমাদের জীবনযাত্রার প্রতিটিক্ষণ। প্রতিটি রিপোর্ট ও ফিচার সাক্ষি হচ্ছে সময়ের।

অবশ্যই এর পিছনে আছে সংবাদ কর্মীদের নিরলস চেষ্টা। আর যিনি এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন- তিনি আমার-আমাদের প্রিয় মানুষ ইনসাফ টোয়েন্টিফোর ডটকমক এর সম্পাদক সাংবাদিক খন্দকার মাহফুজুর রহমান। তার নিজ প্রতিভা ও পরিচালনার দক্ষতায় আজ পত্রিকাটি সবার আস্থা অর্জন করেছে।

নিউজ পোর্টালের পাশাপাশি ইনসাফের বিশেষ আলোচিত ও আলোকিত একটি অনুষ্ঠান ইনসাফ-শো। ভিডিও সংবাদ পরিবেশন অবশ্যই পাঠকের জন্য নতুন চমক।

মাদরাসার ছাত্রদেরকে সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় উৎসাহিত করার পেছনেও ইনসাফ পরিবারের আন্তরিকতা প্রশংসার দাবি রাখে। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীসহ বিশেষ দিবসে প্রিন্টভার্সন পত্রিকাপ্রেমিদের জন্য নতুন উপহার।

ইনসাফ তার বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে টিকে থাকবে পাঠকের হৃদয়ে। সততা ও নিষ্ঠায় জয় করবে মানুষের মন। শুধু একবছর দুবছর বা ছয়বছর নয়- যুগযুগ ধরে তুলে ধরবে দেশ-বিদেশ, মানুষ ও মানবতার বাস্তবচিত্র। কাজ করবে- দেশ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানুষের কল্যাণে। অটল থাকবে ইসলামী নীতি-আদর্শে। আজকের এই শুভক্ষণে ইনসাফকে জানাই আমাদের হৃদয়ের ভালোবাসা। শেষে বলবো সবার আগে এসেছেন! সবার আগে থাকুন- থাকুন সত্যান্বেষী সবার প্রিয় হয়ে।

সময় এখন অনলাইন সংবাদমাধ্যমের

0

জহির উদ্দিন বাবর | বার্তা সম্পাদক : ঢাকা টাইমস


এক দশক আগেও আজকের কোনো খবর জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হতো পরদিন সকাল পর্যন্ত। একটি সংবাদের বিস্তারিত জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হতো প্রায় ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এখন খরব পেয়ে যাই। দ্রুততার সঙ্গে খবর পাওয়ার মূল মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যম। টেলিভিশনেও আমরা দ্রুততার সঙ্গে খবর পাই। তবে এতোটা বিস্তারিতভাবে পাই না। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিস্তৃতি বাড়ার কারণে সেখানেও অনেক সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে চলে আসে। তবে এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকে। এজন্য অনলাইন পত্রিকাগুলোই এখন আমাদের দ্রুত সংবাদ পাওয়ার প্রধান মাধ্যম।

বেশ কয়েক বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে ছয়জনই সংবাদ পেতে অনলাইন পোর্টালের দ্বারস্থ হন। আর বাকি চার ভাগ অন্যান্য গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হন। এর দ্বারাই বোঝা যায় অনলাইন সংবাদমাধ্যম কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে বর্তমান বিশেষ। পঞ্চাশের দশকে ইন্টারনেট আবিষ্কার হলেও সর্বপ্রথম অনলাইন সংবাদপত্র প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে, যার নাম ছিল নিউজ রিপোর্ট। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংবাদপত্র তাদের ছাপা সংস্করণের পাশাপাশি অনলাইন সংস্করণ চালু করে। তাছাড়া ইন্টারনেটের ক্রমান্বয়ে বিস্তৃতির ফলে শুধু অনলাইনেও অনেক সংবাদপত্র প্রকাশিত হচ্ছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটসহ বিভিন্ন কারণে উন্নত বিশ্বের অনেক প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পত্রিকা তাদের ছাপা সংস্করণ বাদ দিয়ে শুধু অনলাইন সংস্করণ প্রকাশ করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে।

আমাদের দেশে অনলাইন সংবাদমাধ্যমের যাত্রাটা খুব বেশি দিন আগের নয়। ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম বিডিনিউজের মাধ্যমে অনলাইনের যাত্রা শুরু হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত হাতে গোনা দুই চারটি অনলাইন পোর্টাল ছিল। ২০১১ সাল থেকে মূলধারার বেশ কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল আত্মপ্রকাশ করে। পরে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পোর্টালের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে মোবাইলফোন ইন্টারনেটের বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে নিউজপোর্টালের সংখ্যা বেড়েছে অনেক দ্রুত। দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়েছে। যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের বেশির ভাগই অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিয়মিত পাঠক।

অল্প সময় হলেও আমাদের দেশে অনলাইন নিউজপোর্টালের সংখ্যাটা বেড়েছে বিস্ময়করভাবে। গত কয়েক বছরে দেশে এক হাজারের বেশি অনলাইন পত্রিকা হয়েছে। যদিও এর বেশির ভাগই ভুঁইফোঁড়। মোটামুটি পেশাদারিত্ব বজায় রেখে টিকে আছে এমন অনলাইন পত্রিকার সংখ্যা শ’য়ের কোটা পেরোবে না। অনলাইন পত্রিকার সংখ্যাটা এভাবে রাতারাতি বাড়ার কারণ হলো এটি শুরু করা অনেক সহজ। মোটামুটি এক হাজার টাকা দিয়ে একটি ডোমেইন কিনে কয়েক হাজার টাকা খরচ করে একটি সাইট তৈরি করলেই হয়। বেশির ভাগ সাইটে নিজস্ব কনটেন্ট থাকে খুবই কম। মূলধারার গণমাধ্যমগুলো থেকে কপি করাই তাদের কাজ। অনলাইন পত্রিকার অস্বাভাবিক এই বেড়ে যাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। এর কারণে একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক এ ধরনের অনলাইন পত্রিকা খুলে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করছে বলেও অভিযোগ আছে। এছাড়াও নানা গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে এসব পোর্টাল বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এজন্য সরকার অনেক দিন ধরে একটি অনলাইন নীতিমালা প্রণয়ন এবং অনলাইন পত্রিকাগুলো নিবন্ধনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। যদিও এখনও সেই নীতিমালাটি আলোর মুখ দেখেনি। এই নীতিমালার মাধ্যমে সরকার অনলাইন গণমাধ্যমের বিকাশ রুদ্ধ করতে চায় বলে কারও কারও অভিযোগ আছে। তবে বাস্তবতা হলো, ন্যূনতম একটি নীতিমালা থাকা উচিত। কারণ না হলে এই অঙ্গনে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে তাতে ভুগতে হবে সবাইকে। তাছাড়া এর কারণে মানসম্পন্ন ও পেশাদার সাইটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অনলাইন পত্রিকাগুলোর কিছু ভালো দিক আছে। যেমন এখানে সাধারণত পাঠকদের কোনো খরচ নেই। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যেকোনো পত্রিকা ফ্রি পড়তে পারেন। অনলাইন মিডিয়া করা তুলনামূলক খরচ অনেক কম। বর্তমানে মিডিয়ার নাম নিলেই যেখানে কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন সেখানে অনলাইন লাখের কোঠাতেও করা সম্ভব। অনলাইনে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে অতি দ্রুত। অনলাইনের কারণে এখন আর কোনো সংবাদ গোপন করার সুযোগ নেই। অনলাইনের কারণে সংবাদপত্র শিল্প আরও বিকশিত হচ্ছে। অনলাইন মিডিয়ার বিস্তৃতির কারণে ব্যাপক হারে সাংবাদিক সৃষ্টি হচ্ছে; অনেকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

তবে এর কিছু নেতিবাচক দিকও আছে। অনলাইন সাংবাদিকতায় প্রতিযোগিতা বেশি, এজন্য ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য বেশি প্রচারিত হয়। পাঠককে আকৃষ্ট করার জন্য অনেকে নীতি-নৈতিকতা পরিপন্থি কাজ করেন। টিকে থাকার জন্য কেউ কেউ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্লাকমেইল করে বিজ্ঞাপন আদায় করেন। দ্রুততার কারণে অনলাইন সাংবাদিকতায় সারবত্তা ও কোনো বিষয়ের গভীরে যাওয়ার প্রবণতা কম। কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে ব্যাঙের ছাতার মতো অনলাইন পত্রিকা জন্ম নিচ্ছে। এগুলো নানাভাবে পাঠককে বিভ্রান্ত করছে। অনলাইন সংবাদের ওপর পাঠক পুরোপুরি আস্থাশীল হতে পারে না। সর্বোপরি অনলাইনে সৃজনশীলতার চেয়ে কপি-পেস্টের প্রবণতা বেশি।
সবকিছুর পরও তরুণ প্রজন্মের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে অনলাইন পত্রিকাগুলো। কারণ এর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন যেকোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই রেডিও টিভির মতো এতে প্রকাশ করা যায়। এমনকি রেডিও টিভি ঘটনার বিস্তারিত জানাতে না পারলেও অনলাইনে তা সম্ভব। অনলাইনে প্রকাশিত রিপোর্টের স্থায়িত্ব অনেক বেশি। প্রকাশিত রিপোর্টগুলো আর্কাইভ করে রাখার ব্যবস্থা থাকায় তা যেকোনো সময় দেখা যায়। অন্য যেকোনো মিডিয়ার (প্রিন্ট, রেডিও ও টিভি) চেয়ে এটা খুঁজে বের করা অনেক সহজ। অনলাইন সংবাদপত্রে লেখার পাশাপাশি গ্রাফিক্স, অডিও, গান, ভিডিও ফুটেজ ও অ্যানিমেশন সংযুক্ত করা সম্ভব। ফলে এটা উপভোগ্য হয়ে ওঠে। তাছাড়া অনলাইন সাংবাদিকতা একটি ইন্টার-অ্যাকটিভ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পাঠকের মতামত জানা ও পাঠককে নিজের মতামত দ্বারা প্রভাবিত করার সুযোগ রয়েছে। এখানে একটি লেখার সঙ্গে একই বিষয়ের অন্যান্য লিংকও দেয়া যায়। ফলে পাঠক খুব সহজেই একই বিষয়ে অন্যান্য লেখা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারে।

অনলাইনের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এখানে জায়গার কোনো সমস্যা নেই। কিংবা রেডিও টিভির মতো সময়েরও সীমাবদ্ধতা নেই। ফলে একজন অনলাইন সাংবাদিক তার স্টোরিকে বিভিন্ন তথ্যে সমৃদ্ধ করে প্রকাশ করতে পারেন। আবার প্রিন্ট মিডিয়ায় একবার প্রকাশিত হয়ে গেলে তা আর সংশোধনের সুযোগ থাকে না। কিন্তু অনলাইনে এ ধরনের কোনো সমস্যা নেই। এ জগতের সাংবাদিকরা ঘটনা ঘটার সঙ্গেই তা আপডেট করে দিতে পারেন। ভুলভাল কিছু চলে গেলে তা সংশোধনেরও সুযোগ পান।

জেনারেল ধারার অনলাইন পত্রিকার পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে ইসলামি ধারার বেশ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকাও বাজারে এসেছে। সম্ভবত এগুলোর মধ্যে ইনসাফ সবার আগে যাত্রা শুরু করেছে। আলেম-উলামাদের যেখানে কোনো মিডিয়াই ছিল না সেখানে এই পোর্টালগুলো তাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। যেহেতু এই অঙ্গনে অনেকগুলো অনলাইন পত্রিকা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে এজন্য তাদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতাও আছে। তবে এই প্রতিযোগিতাটা নেতিবাচক কিছু নয়, এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটা দরকার। শুনেছি পোর্টালগুলোর সম্পাদকরা মাঝে একসঙ্গে বসেছিলেন। সত্যিই আশা জাগানিয়া খবর। তাদের প্রতি পারস্পরিক যোগাযোগটা আরও বাড়ানোর প্রত্যাশা রাখি। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, আপনাদের প্রতিযোগিতাটা নিজেদের মধ্যে যত না এর চেয়ে অনেক বেশি বাইরের জগতের সঙ্গে। সেই প্রতিযোগিতাটা আদর্শের। সুতরাং নিজেদের মধ্যে যেন অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

ইসলামি ধারার যে অনলাইন পত্রিকা ইতোমধ্যে বাজারে এসেছে প্রায় সবাই সংকটে আছে। প্রধান সংকটটা অর্থনৈতিক, আর দ্বিতীয় সংকটটা হলো যোগ্য লোকের অভাব। বড় আকারে মিডিয়া করার আগে ইসলামপন্থীদের উচিত ছোট ছোট এই উদ্যোগগুলো টিকিয়ে রাখা। প্রতিযোগিতার বাজারে তারা যেন টিকতে পারে সে ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করা। কোনো ধরনের সহযোগিতা না করে পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করা উচিত নয়। আজ ছোট ছোট উদ্যোগগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিলে একদিন বড় উদ্যোগও বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

আমাদের মিডিয়া নেই এই আক্ষেপ অনেক শুনেছি। যারা এই আক্ষেপগুলো করেন ছোটখাট উদ্যোগগুলো টিকে থাকার জন্য তারা কী ভূমিকা রেখেছেন? জানি, সেটা খুঁজতে গেলে হতাশ হতে হবে। এজন্য আমরা চাই না আর হতাশ হতে। আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ইসলামি মিডিয়ার ছোটখাট উদ্যোগগুলোকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করি। এভাবেই একদিন কাঙ্ক্ষিত মিডিয়া গড়তে পারবো এবং মিডিয়া নিয়ে আমাদের আক্ষেপ ঘুচে থাকবে।
ইনসাফের ষষ্ঠ বছর পূর্তিতে অনলাইন পত্রিকাটির সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সবার জন্য রইল শুভকামনা। ইনসাফ শতায়ু হোক সেই প্রত্যাশা রইল।

ইনসাফ দেশ ও জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হবে

0

মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী | যুগ্ন মহাসচিব : খেলাফত মজলিস


অনলাইন জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি নাম ইনসাফ। দেখতে দেখতে অর্ধ যুগ অতিক্রম করে, মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।

খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। দেশ ও জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা এই পত্রিকাটির উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ইনসাফকে অনন্যতায় পৌঁছে দিয়েছে

0

মুহাম্মাদ জাকির হুসাইন | কেন্দ্রীয় সভাপতি : বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস


বাংলাদেশের ইসলামী ঘরানার প্রথম অনলাইন পত্রিকা ইনসাফ ইতিমধ্যেই অর্ধযুগ পেরিয়ে সপ্তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই সময়ে ইনসাফ এর বিজ্ঞ ও সাহসী সম্পাদক সাইয়েদ মাহফুজ খন্দকারসহ সংবাদ কর্মী, উপদেষ্টা মন্ডলী, পাঠক ও সংশ্লিষ্টদের জানাই বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।

ঐতিহাসিক শাপলা ট্রাজেডির ঠিক এক বছর পর ২০১৪ সালের ৫ই মে হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সত্য প্রকাশে নির্ভীকতার শপথ নিয়ে পথচলা শুরু করে ইনসাফ। ইনসাফ এর শুরুটা ছিল চ্যালেঞ্জিংয়ের। কারণ, সে সময়ে ইসলাম এবং ওলামায়ে কেরাম ছিল হলুদ মিডিয়ার টার্গেটে। ফলে জাতির সামনে সত্য ছিল অনুদ্ঘাটিত। সত্য অধরাই থেকে যেত। সেসময় প্রয়োজন ছিল হলুদ মিডিয়ার বিরুদ্ধে বুক টান করে সাহসিকতার সাথে সত্য উন্মোচিত করা। আর সেই কাজটাই করেছে ইনসাফ।

জাতির কৃতজ্ঞতা জানানো উচিৎ মাহফুজ খন্দকারকে সাহসী পদক্ষেপের জন্য। অর্ধযুগ ধরে ইনসাফ বস্তুনিষ্ঠতার সাথে সত্য সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে। আমি মনে করি ইনসাফ এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে তাঁদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ফলে ইতিমধ্যেই সুখ্যাতি ও পাঠক প্রিয়তা অর্জিত হয়েছে। আশাকরি তাঁরা বস্তুনিষ্ঠতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখবেন।

ইনসাফ আরেকটি কাজ করেছে, সেটা হলো- গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সভা কিংবা বিজ্ঞ ব্যক্তির সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করেছে। যা প্রশংসার দাবিদার। ইনসাফ দেশ,জাতি,মানবতা ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে কাজ করে যাক যুগ যুগ ধরে -সেই প্রত্যাশাই করি।

ইনসাফ সত্য প্রচারে আপোষহীন

0

হুমায়ুন কবির শাবিব | প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালকঃ স্বপ্নসিঁড়ি সাংস্কৃতিক ফোরাম


ইনসাফের অর্ধযুগ পূর্ণ উপলক্ষে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাই। চলমান ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়াগুলোর মোকাবেলায় ইনসাফ কিছুটা হলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত ও ব্যাপকতার জন্য ইনসাফসহ ইসলামী ঘরানার মিডিয়াগুলো আরো ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।

আমি মনে করি, ইনসাফ সত্য প্রচারে আপোষহীন। ইসলামী সঙ্গীতাঙ্গনকে সর্বশ্রেণীর মাঝে তুলে ধরার ক্ষেত্রে ইনসাফের অবদান অনস্বীকার্য। সামনে এ বিভাগ আরো সমৃদ্ধি লাভ করবে এই প্রত্যাশা করি।

ইনসাফকে আল্লাহ্‌ শতশত বছর বাঁচিয়ে রাখুন | মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ

0

মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ | প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক : শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের


আলহামদুলিল্লাহ! ইসলামের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, সবসময় যুগীয় চাহিদা পূরণ করার ব্যবস্থা দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত। কোনো যুগে মানবজাতি সমস্যায় পড়বে, আর ইসলাম তার সমাধান দিবেনা এমনটি নয়। মানুষ যে যুগে যে অবস্থায় উপনীত হয়, যাহাই প্রয়োজন হয়, ইসলাম তাৎক্ষণিক সেই অবস্থার উপযোগী বিধান দিয়ে থাকে। এ জন্যই আজকে লকডাউনের সময় নামাজ পড়া না পড়ার বিষয়ে নতুন নতুন যেসব মাসআলা আসছে, করোনা ভাইরাস না হলে এই মাসআলাগুলো আমাদের সামনে আসতো না। একেকটা সমস্যা আসছে আর ইসলাম সাথে সাথেই তার সমাধান দিয়েছে।

দাওয়াহ্ বা প্রচারের যতো সিস্টেম ইসলামের শুরুলগ্ন থেকে ছিলো, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া-সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের যুগে তা দিনদিন উন্নতি করতে করতে একসময় ঘোড়ায় চড়ে পত্র বাহকরা পত্র আদান প্রদান করতো। সেই চীন থেকে ইরাকে মাত্র ৩ দিনে পত্র আসা যাওয়া করতো। সেটিও একটি যুগ ছিলো। যুগের ধারাবাহিকতায় আধুনিককালে সাইন্স ও টেকনোলজির কারণে একসময় প্রিন্ট মিডিয়া আসলো। শুধু প্রিন্ট পত্রিকার দ্বারা প্রতিদিন খবরাখবর পাওয়া যেতো। এরপর রেডিও টিভি আসলো। এভাবে আসতে আসতে বর্তমানে আমরা একদম আধুনিকতর যুগে অবস্থান করছি। বর্তমান যুগের সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুক, অনলাইন গণমাধ্যম ইত্যাদি প্রত্যেকটা যুগীয় বিষয়কে আমাদের মুসলমানদের উচিত ইসলামের সপক্ষে কাজে লাগানো। একটিও যেনো ইসলামের বিপক্ষে না লাগে। আমরা যদি ইসলাম বলতে শুধু ১৪০০ বছর আগের ইসলামকেই বুঝি, বর্তমান যুগীয় বিষয়াদির সাথে যদি ইসলামের সমন্বয় না করি, তাহলে এই দৃষ্টিভঙ্গি আস্তে আস্তে আমাদেরকে বাতিলের দিকে ধাবিত করবে এবং ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো যুগোপযোগী সব বিষয়গুলোকে ভালোভাবে রপ্ত করে ইসলামের বিধান অনুযায়ী এগুলোকে পরিচালনা করা এবং ইসলামের খেদমতেই লাগানো।

আলহামদুলিল্লাহ! বর্তমানে ইনসাফসহ প্রত্যেকটি ইসলামী মিডিয়াকে আমি অন্তর থেকে সাপোর্ট করি এবং অত্যন্ত মূল্যবান মনে করি। এদের মাধ্যমে ইসলামের বিরাট খেদমত হচ্ছে এবং আরো হবে বলে মনে করি। তবে এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো, ইসলামী মিডিয়া আর অনৈসলামিক মিডিয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমাদেরটা যেহেতু ইসলামী মিডিয়া তাই কোনরকম মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে সত্যের উপর এটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মিডিয়ার মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দেওয়া, মানুষকে ধোকা দেওয়া ইত্যাদি থেকে ইসলামী মিডিয়াগুলো বর্তমানে যেমন বিরত আছে ভবিষ্যতেও বিরত থাকতে হবে। ইসলামী মিডিয়ায় এগুলো থাকতে পারেনা আর এগুলো থাকলে সেটা ইসলামী মিডিয়া হতে পারেনা।

সেক্ষেত্রে খুশির কথা হলো, দেশের অন্যতম ইসলামী মিডিয়া ইনসাফ ইতিমধ্যে অর্ধযুগ পার করেছে। তারা খুব সুন্দরভাবে এবং ভালোভাবে বড় বড় দায়িত্বশীল উলামায়ে কেরামের ছায়াতলে কাজ করছে। এটাই আমাদের আস্থার জন্য যথেষ্ট। তাই এই ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ইনসাফ ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও মোবারকবাদ জানাই। দুআ করি অর্ধযুগ নয়; শতশত বছর আল্লাহ্ এই মিডিয়াকে জীবিত রাখুন। বিচক্ষণ উলামায়ে কেরামের দিকনির্দেশনায় ইনসাফ আরো উন্নতি লাভ করুক, আরো ব্যাপকতা লাভ করুক।

আমি আন্তরিকভাবে ইনসাফের প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। প্রত্যেক মুসলমানকে এ ধরনের ইসলামী মিডিয়ার সাথে যুক্ত থাকাকে জরুরি মনে করি। আল্লাহ্ তাআ’লা সকলকে জাযায়ে খায়ের দান করুন। আমীন।

ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র নিয়ে সচেতন করতে ইনসাফ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে

0

মাওলানা জুনাইদ আল হাবীব | সহসভাপতি : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও যুগ্মমহাসচিব : হেফাজতে ইসলাম


নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম! ইসলামী ঘরানার পরিচিত অনলাইন পত্রিকা ‘ইনসাফ’ অর্ধযুগ পূর্ণ করে সপ্তম বর্ষে পদার্পণের এই বিশেষ আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানাই। এবং আগামীর পথ চলা যেন সুন্দর হয় -সেই কামনা করছি।

ইসলামের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়া প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর মিডিয়ার আবিষ্কার ইসলামের বানী সর্বত্র পৌঁছাতে সহজ করে দিয়েছে।

সুতরাং বিশ্ববাসীকে আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম এর পথে ডাকার জন্য মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যপক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে দ্বীন প্রচারে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে উলমায়ে কেরামকে সুচিন্তিত পদক্ষেপ গ্রহন করা সময়ের দাবী।

ইসলাম বিরোধী ও বিজাতীয় ধ্যানধারনায় লালিত মিডিয়া আজ এদেশের -ইসলামী কৃষ্টি-কালচার, সংস্কৃতি, সভ্যতা, মসজিদ, মাদরাসা, আলেম – উলামা, হক্কানী পীর-মাশায়েখ, ইসলামী তাহজীব-তামাদ্দুন এর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যা বানোয়াট, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে নাটক, সিনেমা সাজিয়ে এবং বিভিন্ন সংবাদ পরিবেশন মাধ্যমে তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে ।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি থেকে ইসলামের শিকড় মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে কতিপয় ইসলাম বিদ্বেষী প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এসম্পর্কে দেশের ধর্মপ্রান মুসলিম জনতাকে সজাগ এবং সচেতন করতে ইনসাফ ইতিমধ্যেই প্রসংশনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে।

পাশাপাশি জনগণের পক্ষে এবং ইসলামের পক্ষে কথা বলার মতো যেসব মিডিয়া কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে। আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন ‘ইনসাফ’কে দিন দিন তারাক্কি দান করুন, আমীন।

অনৈসলামীক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করে সমাজ পরিবর্তন ঘটাতে হলে মুসলামদের আজ মিডিয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীতা বুঝতে হবে। এবং বাংলাদেশের তরুণ আলেম উলামাদের সত্য প্রকাশের দ্বীপ্ত অঙ্গীকার নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফিক দিন এবং ইসলামের সত্যবাণী সমাজে পৌঁছে দিতে নিরলস খেদমত করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

বাংলাদেশে ইসলামি মিডিয়ার অগ্রপথিক ইনসাফ

0

মুফতী মোহাম্মদ জমীর উদ্দিন কাসেমী | মুহাদ্দিস : জামিয়া তৈয়বিয়া ও জামিয়া দাওয়াতুল কুরআন, নারায়ণগঞ্জ


বাংলাদেশের প্রথম ইসলামি ঘরানার অনলাইন পত্রিকা ইনসাফ অত্যন্ত কর্মমুখরতার মাধ্যমে দীর্ঘ অর্ধযুগ অতিক্রম উপলক্ষে পাঠক হিসেবে আমি আনন্দিত।

দ্বীনের নগন্য একজন খাদেম হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ আমি অনুভব করছি দেশ, জাতি ও সমাজ সর্বোপরি সারাবিশ্বের সামনে ইসলামকে সঠিকরূপে উপস্থাপনের জন্য মিডিয়ার বিভিন্ন সেক্টরে তথা অনলাইন অফলাইন টিভি রেডিও এবং জাতীয় পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রে ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন কিছু সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতি অতীব জরুরি।

এক্ষেত্রে অনলাইন পত্রিকা ইনসাফ টোয়েন্টিফের ডট কম আমাদের দেশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে অত্যন্ত সততার সাথে তথ্যবহুল সংবাদ প্রচার করে থাকে।

সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে ইনসাফ স্বল্প সময়ে যে পাঠকপ্রিয়তা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে তাতে একজন পাঠক হিসেবে আমি খুবই আনন্দিত।

আমি আশা করি এতদিন যেমন ইনসাফ আমাদেরকে সঠিক নির্ভরযোগ্য ও তথ্যবহুল সংবাদের মাধ্যমে উপকৃত করেছে, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।

পরিশেষে আমি এটাই বলবো, ইনসাফ সম্পাদক ও অন্যান্য কর্মীরা যেভাবে বিজ্ঞজন ও উলামায়ে কেরামের পরামর্শ ও আদর্শ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও যেন এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে সেই কামনাই করি।