Home Blog Page 4639

দেওবন্দের নীতি বিসর্জন দিয়ে সরকারি অনুদান গ্রহণ করতে পারে না কওমী মাদরাসা : বেফাক

0

সরকার ঘোষিত কোনো সহায়তা নিবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।

এর আগে দেশের ৬,৯৫৯টি কওমী মাদরাসাকে ৮ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২ মে) বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েঅনুষ্ঠিত মজলিসে খাসের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সরকারি অনুদান গ্রহণ কওমী মাদরাসার দেড়শত বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য এবং দারুল উলূম দেওবন্দের নীতি আদর্শকে বিসর্জন দেয়া। তাই এধরনের অনুদান গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য সকল কওমী মাদরাসার দায়িত্বশীলদের প্রতি আহবান জানানো হয়।

বৈঠকে বেফাক নেতৃবৃন্দ বলেন, উপমহাদেশব্যাপী বিস্তৃত কওমী মদরাসাসমূহ ভারতের বিখ্যাত দারুল উলূম দেওবন্দের নীতি-আদর্শ ও শিক্ষাক্রম অনুসরণ করেই পরিচালিত হয়ে আসছে। দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠাকালে অলঙ্ঘনীয় যে ‘উসূলে হাশতেগানা’ তথা আট মূলনীতি নির্ধারণ করে, তার অন্যতম একটি হলো যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকারী অনুদান গ্রহণ থেকে বিরত থাকা। সুতরাং এই মূলনীতিকে বিসর্জন দিয়ে দেশের কোনো কওমি মাদরাসা সরকারী অনুদান গ্রহণ করতে পারে না। অতীতেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কঠিন সংকটকালীন সময়ে আমাদের পূর্বসূরিরা অনুদানের জন্য সরকারের দ্বারস্থ হননি।

তারা আরো বলেন, এই উপমহাদেশে ইসলাম, মুসলমান তথা দ্বীনের হেফাজতের জন্য আকাবির ও আসলাফগণ এক কঠিন পরিস্থিতিতে যে ৮ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার হুবহু ঐ মূলনীতিসমূহের ভিত্তিতেই কওমী মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি দিয়েছে এবং স্বীকৃতি সংক্রান্ত আইনের ২(১) ধারায় কওমি মাদরাসার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে “মুসলিম জনসাধারণের আর্থিক সহায়তায় উলামায়ে কেরামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ইলমে ওহীর শিক্ষা কেন্দ্রই হলো কওমী মাদরাসা। তাই ঐতিহাসিক সেই মূলনীতি এবং কওমী মাদরাসার সংজ্ঞাকে উপেক্ষা করে আমরা কোনোভাবেই সরকারি অনুদান গ্রহণ করতে পারি না।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কওমী মাদরাসার দায়িত্বশীলদের প্রতি বিশেষ আহ্বান, ক্ষণিকের সঙ্কট উত্তরণে সরকারি অনুদান গ্রহণ করে অনন্তকালের কুদরতি সাহায্যের রাস্তা বন্ধ করবেন না। আল্লাহ পাকের উপর দৃঢ় ভরসা রাখুন, করোনার মহামারি থেকে বিশ্ববাসী ও মুসলিম উম্মার মুক্তির জন্য দোয়া জারি রাখুন। সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’আলা আমাদের হেফাজত করবেন, ইনশাল্লাহ।

বৈঠক থেকে বেফাকের সভাপতি আল্লামা আহমদ শফি এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই সিদ্ধান্তকে অনুমোদন করেন।

বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, আল্লামা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মাহফুযুল হক, মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মুফতি নূরুল আমিন, মাওলানা মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, এর আগে আল্লামা শাহ আহমদ শফির নেতৃত্বাধীন হাটহাজারী মাদরাসা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, হাটহাজারী এবং তার অনুসারী কোনো মাদরাসা সরকারি অনুদান গ্রহণ করবে না।

চিকিৎসকদের জন্য যাবতীয় সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করুন : আল্লামা শফী

0

ইনসাফ টোয়েন্টিফোর ডটকম |  জুনাইদ আহমদ


করোনাভাইরাসের মহামারি আজ বিশ্বজুড়ে। আমাদের দেশেও এর প্রকোপ দিনদিন বাড়ছে। প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। আর এসব ধৈর্যসহকারে সামলে নিচ্ছে চিকিৎসকগণ। জীবনের মায়া ত্যাগ করে দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। তাই চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত এন-৯৫ মাস্ক সহ প্রায়োজনীয় সব সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান করছি।

আজ শনিবার ২ মে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা আহমদ শফী এ আহ্বান জানান।

আল্লামা আহমদ শফী বলেন, চিকিৎসক ও রোগীর সেবকদের জন্য রয়েছে নববী সুসংবাদ। রাসূল সা. বলেছেন, “যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনো অসুস্থ মুসলমানকে দেখতে যায়, সত্তর হাজার ফেরেশতা বিকাল পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। আর বিকেলে রোগী দেখতে গেলে সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা দোয়া করে…।” (তিরমিজি শরীফ : ৯৬৭)

আমীরে হেফাজত আরো বলেন, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী প্রায় চারশ ডাক্তার চিকিৎসা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এটা যেমন দেশের জন্য উদ্বেগজনক তেমনি এ দুর্যোগকালে তাদের ত্যাগ প্রশংসনীয়। পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী না থাকলেও অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তারা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের সেবা ও শ্রম এ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

আল্লামা আহমদ শফী আরো বলেন, গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী দেশের অনেক জেলা ও উপজেলায় করোনা শনাক্ত করা ও চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। অনেক হাসপাতালে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় অনেক চিকিৎসক ঠিকমতো রোগী দেখতে পারছেন না। ফলে অন্যান্য রোগীদের নিয়মিত সেবা ব্যহত হচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক। জেলা-উপজেলার সব হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক!