বৃহস্পতিবার | ১৮ সেপ্টেম্বর | ২০২৫

৭০ বছর বয়সে স্বপ্ন স্পর্শ করলেন দাম্মামের মুসলিম নারী

৭০ বছর বয়সে দাম্মামের ইমাম আব্দুর রহমান বিন ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকে জিপিএসহ প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হয়েছেন দাম্মামের সালওয়া আল ওমানি। ১৮ বছর বয়সে যিনি পড়াশুনাতে ক্ষ্যান্ত হন। পরে জীবনের ৫০তম বসন্তে এসে ফের পড়াশোনায় মন দেন। এরপর এই ঈর্ষণীয় ফলাফল লাভ করেন।

আরব নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালওয়া আল ওমানি বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত এক স্বপ্ন পূর্ণ করতে পেরেছি। এজন্য আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এতে যে আমি কী পরিমাণ আনন্দিত হয়েছি, ভাষায় ব্যক্ত করতে পারব না। ইতোমধ্যে অনেক শুভানুধ্যায়ীদের থেকে ফোন কল পেয়েছি। তাদের এ উচ্ছ্বাস আমার আনন্দকে আরো মুখরিত করেছে। আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।

তিনি আরো বলেন, আমাকে প্রিন্সেস আবির বিনতে ফয়সাল বিন তুর্কি আল-সৌদ সম্মানিত করেছেন। আমি তাদের এ মূল্যায়নে অভিভূত। এটি আমার জীবনের অনেক বড় একটি পাওনা হিসেবে থাকবে।

আল ওমানি ১৮ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। তখনই বিদায় নেন বিদ্যালয় থেকে। তার বিবাহ হয় নিজেরই চাচাত ভাইয়ের সাতে। এর তারা ইরাকের বসরায় গিয়ে বসত গড়েন। সেখান থেকে প্রথমে কুয়েত এরপর সৌদি আরবে থিতু হন।

আল-ওমানির দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছেন। তাদের কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে স্নাতক পাশ করেছেন। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে দাম্মামে বসবাস করছেন। তিনি যখন পুনরায় পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেন, তখন তার হাইস্কুলের সার্টিফিকেট হারিয়ে গিয়েছিল। সেজন্য তাকে অনেক বিড়ম্বনা ভোগ করতে হয়েছে। তাকে আবারো সেই হাইস্কুল থেকেই পড়াশোনা শুরু করতে হয়েছে।

তাকে ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে শুরু করতে হয়েছিল, শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষা দিতে বসতে হয়েছিল। পরে একটি মাধ্যমিক স্কুলে তৃতীয় মাধ্যমিক গ্রেডের সার্টিফিকেটের জন্য পরীক্ষা দিতে হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, তখন খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল। কারণ, আমাকে আমার নাতি-নাতনির বয়সের মেয়েদের সাথে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। তবুও আমি নিজের লক্ষ্য অর্জনে পিছপা হইনি। ধৈর্যের সাথে হাইস্কুলের পড়াশোনা শেষ করেছি।

আল-ওমানি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার প্রস্তুতির জন্য জেনারেল অ্যাপটিটিউড টেস্টে ৮২ নম্বর পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি ২০১৯ সালে ইমাম আব্দুর রহমান বিন ফয়সাল ইউনিভার্সিটিতে কলা অনুষদে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে গৃহীত হই। এভাবে আমার স্বপ্ন সত্য হয়।

তিনি জীবনের এই পর্যায়ে এসে সফলতার দেখা পেয়ে বলেন, আসলে দৃঢ় সংকল্প থাকলে অসম্ভব বলতে কিছু নেই। তাই আশা হারানো উচিৎ নয়। একবারেই না অর্জন করার চেয়ে দেরিতে হলেও অর্জন করা ভালো।

সূত্র : আরব নিউজ

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img