দীর্ঘদিন ধরে নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব।
আর এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রিয়াদের প্রথম পছন্দ আমেরিকা। তবে সৌদি আরবের পারমাণবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ইউরেনিয়াম সংগ্রহের উপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছে ওয়াশিংটন।
তাই এই ধরনের বিধি নিষেধের বিপরীতে গিয়ে চীন, ফ্রান্স ও রাশিয়ার কাছ থেকে আশা বিকল্প প্রস্তাবগুলি সৌদি আরব গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করছে বলে জানিয়েছে “ফিনান্সিয়াল টাইম”। যার ফলে প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটনকে চাপে ফেলতে যাচ্ছে রিয়াদ।
কারণ ওয়াশিংটনের কাছ থেকে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা চুক্তির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে দেশটি।
এদিকে, আমেরিকা সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চুক্তির বিনিময়ে রিয়াদের সাথে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উপর জোর দিচ্ছে।
তবে এখানে সৌদি আরবের সাথে চীনের সম্পর্ক জোরদার হওয়ার বিষয়টি অন্যতম একটি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার জন্য। কারণ গত মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব তার প্রধান আঞ্চলিক শত্রু ইরানের সাথে পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
এছাড়াও সম্প্রতি অর্থনৈতিক জোট “ব্রিকসে” যোগ দেওয়ার ফলে রিয়াদের সাথে ওয়াশিংটনের আরও বেশি দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।
তবে চীনের সাথে ক্রমাগত সম্পর্কের উন্নতি হলেও এখনও পর্যন্ত আমেরিকার দেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল সৌদি আরব।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য উভয় দিক থেকে আসা সেরা প্রস্তাবটি বিবেচনা করবে সৌদি আরব।
পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন, এ বিষয়ে রিয়াদ অবশ্যই ওয়াশিংটনকে বেছে নেবে। কারণ তাদের কাছে উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। পাশাপাশি তারা সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
অন্যদিকে, চলতি মাসের শুরুতে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হ্যানেগবি জানিয়েছে, গবেষণার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিরোধীতা করবেনা তারা।
তিনি বলেন, “মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনা করছে যা প্রতিবেশীদের জন্য বিপদজনক নয়।”
উল্লেখ্য; সৌদি আরব ও অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম একটি কূটনৈতিক বিজয় হবে বলে ধরা হচ্ছে। কারণ এই উদ্যোগটিকে ইতিমধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছে ওয়াশিংটন।
সূত্র: মিডিল ইস্ট আই ও মিডল ইস্ট মনিটর