ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বে ফিলিস্তিনিদের চলমান সমস্যা সমাধান করা জরুরি বলে মার্কিন প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক ‘পড সেভ দি ওয়ার্ল্ডের’ সাপ্তাহিক আয়োজনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, “সৌদি প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা এতটুকু নিশ্চিত হয়েছি যে, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রক্রিয়াটি সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে ফিলিস্তিন ইস্যুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের এ প্রক্রিয়াটি ‘আব্রাহাম চুক্তির’ অন্তর্গত একটি বিষয়। যেটি ২০২০ সালে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় শুরু হয়।
এ চুক্তি অনুযায়ী বলা হয়েছে, আরবদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিনিময়ে পশ্চিম তীর জুড়ে অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধ করবে দখলদার ইসরাইল। এখন পর্যন্ত মোট ৪ টি দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান এ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, “ইসরাইল ও আরব বিশ্বের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য যেসব আলোচনা চলছে তার কোন বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা তাদের মতপার্থক্য মীমাংসা করতে পারবে। যেখানে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ভাল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।”
তিনি আরো বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে ” আমাদের ফয়সালায় দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।”
ব্লিঙ্কেন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চুক্তিতে সফল হয়। তাহলে এই চুক্তির উদ্দেশ্য অনুযায়ী আগামী বিশ্বকে আরো শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যদি আপনার হাতে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ নেতৃত্ব প্রদানকারী মুসলিম দেশ থাকে এবং তা ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে এই অঞ্চলের বাইরে ও এর সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।”
অন্যদিকে, এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত রয়েছে ইসরাইল বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত মাইক হারজোগ।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘আটলান্টিক কাউন্সিলের’ একটি বৈঠকে তিনি বলেন, সৌদি আরবের সাথে এ চুক্তির বিষয়ে এখনো পর্যন্ত একটি জানালা খোলা রয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ ছাড়াও এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য যা যা করা সম্ভব তা করবে ইসরাইল।
হারজোগ আশা করছেন, আব্রাহাম চুক্তির মতো এর বিরোধিতা না করে এ প্রক্রিয়ায় যোগদানের সুযোগটি কাজে লাগাবে ফিলিস্তিনিরা।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর ও জেরুসালেম পোস্ট