৩য় বারের যুদ্ধবিরতির ৬ষ্ঠ দফার বন্দী বিনিময়ে গাজ্জা গণহত্যা পরিচালনাকারী ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ৩ নাগরিকের বিপরীতে মুক্তি পেলো ৩৬৯ ফিলিস্তিনি।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হামাস ও ইসরাইলের মাঝে এই বন্দী বিনিময় হয়।
ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস প্রথমে ইসরাইলী বন্দী আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ, সাগুই ডেকেল-চেন ও ইয়াইর হর্ন নামের ৩ বন্দীকে মুক্তি দেয়।
গাজ্জার খান ইউনুসে দলটির রাজনৈতিক ও সামরিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এবং লড়াই করতে করতে শহীদ হওয়া ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বাড়ির পাশেই তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রয়োজনীয় নথিপত্রে সাক্ষর আদান-প্রদান পূর্বক তাদের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় হামাসের সদস্যরা।
অবৈধ রাষ্ট্রটির সকল জনগণের ন্যায় এই তিন ইসরাইলীও মূলত ভিনদেশের নাগরিক। সাগুই ডেকেল-চেন (৩৬) আমেরিকা বংশোদ্ভূত, আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ (২৯) রাশিয়া বংশোদ্ভূত ও ইয়াইর হর্ন (৪৬) আর্জেন্টাইন বংশোদ্ভূত। এদের সকলকে দখলকৃত ফিলিস্তিন বা অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের নীড় ওজেড থেকে জিম্মি করেছিলো হামাসের ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা।
নিজ নাগরিকদের বুঝে পাওয়ার পর ইসরাইল ৩৬৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়। তন্মধ্যে ৮ জন পশ্চিম তীরে, ৪ জন পবিত্র কুদস নগরীতে ও ৩৩৩ জন গাজ্জায় ফিরে যাবেন। বাকি ২৪ জন মিশরে নির্বাসিত হবেন। মুক্তিপ্রাপ্তদের মাঝে এমন ৯জন ফিলিস্তিনিও রয়েছেন যাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিলো অবৈধ রাষ্ট্রটির আদালত।
এছাড়া এবারের বন্দী বিনিময়ে ইসরাইল দাউদী তারকার চিহ্ন সম্বলিত সাদা টি-শার্ট পরিধান করতে বাধ্য করে বলে জানায় মুক্তি পাওয়া বন্দীরা। যেখানে আরবিতে লেখা ছিলো, আমরা ভুলবো না এবং ক্ষমা করবো না। ইতিমধ্যে যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের বীরত্বের পরিচয় দেওয়া বন্দীদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। তাদের বর্ণবাদী টি-শার্ট পড়তে সহিংসভাবে বাধ্য করা হয়েছে। যা মানবিকতা ও আইন দুটোরই সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা কঠোরভাবে এর নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনি বন্দীদের সাথে তাদের এই আচরণ ইসরাইলী বন্দীদের সাথে হামাসের আচরণ ও নৈতিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদেরকে অবশ্যই বন্দীদের সাথে মানবিক আচরণ করতে হবে।
অপরদিকে রেডক্রস জানায়, ইসরাইলের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া অধিকাংশ বন্দীদের শারিরীক অবস্থা ভালো নেই। তন্মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা বেশ গুরুতর থাকায় রামাল্লাহতেই একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা









