ভারতে ধর্মীয় মহাকুম্ভ মেলায় যাওয়ার ট্রেন ধরতে পদদলিত হয়ে বহুসংখ্যক ব্যক্তি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগের এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগের কর্মকর্তা দৌলত রাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, শনিবার রাতে দিল্লি রেল স্টেশনে পদদলিত হয়ে বহুসংখ্যক ব্যক্তি হতাহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলেও জানান তিনি।
হঠাৎ প্রচুর ভীড়ের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় হিন্দু ধর্মীয় মহোৎসব কুম্ভ মেলা চলছে। তার ট্রেন ধরতেই স্টেশনে অসংখ্য ভক্তের আকস্মিক ভীড় জমে।
এছাড়া দিল্লি রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়, গতকাল উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ (এলাহবাদ) এর যাত্রীর চাপ ছিলো অনেক বেশি। ঘন্টায় শুধু সাধারণ শ্রেণীর টিকেটই বিক্রি হচ্ছিলো ১৫০০ টি করে। স্বাধীন সেনানী এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর রাজধানী এই দুটি ট্রেন বিলম্বিত হচ্ছিলো। পাশাপাশি ভক্তদের জন্য রাত ১০টার দিকে একটি স্পেশাল ট্রেন ছাড়ার ঘোষণা এসেছিলো। ফলে বিলম্বিত ট্রেনের যাত্রীরাও ট্রেন ধরতে ১২,১৩ ও ১৪ নং প্লাটফর্মে হুড়োহুড়ি করে আসা শুরু করলে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় কংগ্রেস নেতারা বিজেপি সরকার ও রেল ব্যবস্থাপনার তীব্র সমালোচনা করেন। রেলমন্ত্রী আশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগ দাবী করেন।
অপরদিকে রেল মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, নিহতের পরিবারকে দশ লক্ষ, গুরুতর আহতদের আড়াই লক্ষ ও সাধারণ আহতদের এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এছাড়া বিজেপির বিরুদ্ধে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ আনে তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সাকেত গোখলে এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন, মোদি ও যোগীর সরকার পবিত্র কুম্ভমেলাকে তাদের জনসংযোগে পরিণত করেছে। তারা একে যতটা না ধর্মীয় তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক কার্যকলাপে ব্যবহার করছে। হতাহতের বিষয়টিও শুরুতে তারা স্বীকার করতে চায়নি। মর্মান্তিক ঘটনা স্বীকার পূর্বক শোক প্রকাশ না করে তারা একেকটা লাশের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চেয়েছে।
যদি তাদের নূন্যতম লজ্জা ও মানুষের জীবনের প্রতি উদ্বেগ থেকে থাকে তবে অবিলম্বে তাদের খণ্ডকালীন অযোগ্য রেলমন্ত্রী বৈষ্ণবকে বরখাস্ত করবে, যে কি না রেল নিরাপত্তা ও সমস্যা নিয়ে চিন্তার পরিবর্তে সর্বদা সোশাল মিডিয়ায় রিলস শেয়ার করে বেড়ায়।
সূত্র: দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনাদোলু