ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গণি বারাদার জাতীয় ঐক্য ও ইসলামি শাসনব্যবস্থার স্বার্থে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তান সব আফগানের জন্য। এখানে জাতি, ধর্ম বা গোষ্ঠীগত বিভাজনের কোনো স্থান নেই। আমাদের উচিত ঐক্য ধরে রাখা, বিভেদ ভুলে যাওয়া এবং দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি), শিয়া সম্প্রদায়ের উচ্চ কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত “জাতীয় ঐক্য সংরক্ষণ ও ইসলামি শাসনব্যবস্থার প্রতি সমর্থন” শীর্ষক সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। এতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি, জাতিগত নেতৃবৃন্দ, আলেম ও যুবসমাজ অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে তিনি বলেন, “আফগান জাতি বিভিন্ন জাতি, ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে গঠিত। এই বৈচিত্র্য পারস্পরিক পরিচয়ের জন্য হলেও অতীতে এর অপব্যবহার করা হয়েছে। ইমারাতে ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত বিভাজনের জন্য এই পার্থক্যকে ব্যবহার করা হয়েছিল, যা দুঃখজনক।”
তিনি আরও বলেন, “আফগান জাতিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বিভক্ত করা হয়েছিল। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় বিষয়ে ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে। আজও আমরা প্রকৃত জাতীয় ঐক্যের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারিনি।”
মোল্লা বারাদার বলেন, “সব আফগান একসঙ্গে দখলদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ও জিহাদ পরিচালনা করেছে। ইসলামি শিক্ষার আলোকে দেশের বৃহত্তর লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আজকের ইসলামি আমিরাত তাদের আত্মত্যাগের ফসল।”
তিনি উল্লেখ করেন, “যেসব জাতি ঐক্য বজায় রেখেছে, তারা সহজেই তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে। জাতীয় ঐক্যের সংরক্ষণ আমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আফগানিস্তান সব আফগানের অভিন্ন আবাস। এখানে সবাই সমান অধিকারভোগী। জাতি, ধর্ম বা গোষ্ঠীর ভিত্তিতে কোনো বিভেদ থাকার সুযোগ নেই। ইসলামি আমিরাত জাতিগত বৈচিত্র্যকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখে এবং এই ঐক্য সংরক্ষণের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।”
জনগণকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “দেশ ও শাসনব্যবস্থার শত্রুরা সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
আফগান ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, “ইসলামি আমিরাত আপনাদের শাসনব্যবস্থা। এটি প্রতিটি আফগানের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের রক্ষক। জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পারস্পরিক ঐক্য বজায় রাখতে হবে, মতভেদ দূর করতে হবে এবং চিন্তা ও শক্তি দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য নিবেদন করতে হবে।”
সম্মেলনে বক্তারা ইসলামি শাসনব্যবস্থার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন এবং জাতীয় ঐক্য সংরক্ষণের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তারা বলেন, “যদি আমরা জাতীয় ঐক্য বজায় রাখি ও দেশ গঠনে একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে আফগানিস্তান একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।”
সূত্র : আরটিএ