শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

আদালতকে কথা দিলেও সরকারী দখলদারিত্ব চলমান; ৫৮ একর ওয়াকফ সম্পত্তি দখল

উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার সংশোধিত ওয়াকফ আইন অনুসারে ওয়াকফ বোর্ড ও সম্পত্তিতে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ না করার কথা দিলেও ৫৮ একর ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারী ভাবে দখল করে নিয়েছে উত্তর প্রদেশের উগ্র হিন্দুত্ববাদী যোগী আদিত্য নাথের সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের কৌশাম্বী জেলার ৫৮ একর ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারি জমি বানিয়ে নিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী যোগী আদিত্য নাথের প্রাদেশিক সরকার। পরিবর্তিত ওয়াকফ আইনের আশ্রয় নিয়ে এই সম্পত্তি দখল করা হয়।

উগ্রবাদী সরকারের কর্মকর্তারা দাবী করছেন, ওয়াকফ বোর্ড রেকর্ড ভুক্তিতে ভুল করায় কৌশাম্বী জেলার ৫৮ একর জমি ওয়াকফ সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছিলো। তারা তা উদ্ধার করেছেন শুধু।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মধুসূদন হুলগি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, পূর্বে ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে থাকা ৯৩ বিঘা বা প্রায় ৫৮ একর জমি সরকারী সম্পত্তি হিসেবে নিবন্ধন করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, জেলায় মোট ৯৮.৯৫ হেক্টর বা ২৪৪.৪১ একর ওয়াকফিয়া জমি রয়েছে, যা ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত।সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে ভবিষ্যতে আরও ওয়াকফিয়া জমি যাচাই করা হবে।

মুসলিমরা মোদি ও যোগী সরকারের এমন সন্ত্রাসবাদী ও ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডে ফুঁসে উঠছেন। কারণ মোদির নেতৃত্বাধীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকার দেশটির ৩য় সর্বোচ্চ সম্পত্তির অভিভাবক ওয়াকফ বোর্ডে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ নিশ্চিত করতে এবং বিশাল পরিমাণ সম্পত্তিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের রাষ্ট্রীয় দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় ওয়াকফ আইনে সংশোধন আনে। যার প্রেক্ষিতে গত ১৫-২০ দিনে দুই শতাধিক ওয়াকফিয়া মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গুড়িয়ে দেওয়া হয় বহু মসজিদ।

সংশোধনের নামে ওয়াকফ আইনে এমন উদ্দেশ্যমূলক পরিবর্তন আনায় সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেশ কয়েকটি পিটিশনও হয়। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এর শুনানি হয়।

শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের প্রস্তাব রাখেন। প্রস্তাবে বলা হয়, আদালত কর্তৃক ওয়াকফ হিসেবে ঘোষিত সম্পত্তিকে চলমান ওয়াকফ যাচাই কার্যক্রমে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের কারণে ডিনোটিফাই বা প্রশাসনিকভাবে বাতিল করা যাবে না। তদন্তের সময় কালেক্টর ক্ষমতাবলে ওয়াকফ সম্পত্তি বাতিল করতে পারবেন মর্মে যে ধারাটি রয়েছে তিনি তা কার্যকর করতে পারবেন না।

কেন্দ্রীয় সরকার বা তার প্রতিনিধি ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে পদাধিকারবলে সদস্য নিযুক্ত করতে পারবেন। তবে নিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া সকল সদস্যকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে।

সলিসিটর জেনারেল ও অন্যান্য আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি স্থগিত করে এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে।

আজ ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ২টার শুনানিতে সরকার পক্ষ আদালতকে আশ্বস্ত করে যে, পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সরকার কোনো ধরণের ওয়াকফ নিয়োগ দিবে না। ওয়াকফ বোর্ড কর্তৃক দাবি করা সম্পত্তির অবস্থারও কোনো পরিবর্তন করবে না। আদালতকে এমন কিছু না করার কথা দিলেও তারা তা রাখেনি। বরং উত্তর প্রদেশের কৌশাম্বী জেলার ৫৮ একর জমি সরকারের বলে দখল করে নেয়।

spot_imgspot_img

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img
spot_img