আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাসক দলীয় বৈঠকে পিয়ংইয়ং তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার ও প্রচলিত সামরিক শক্তি উভয়কে অগ্রসর করার জন্য একটি নীতি ঘোষণা করবে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।
আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ কথা জানায়। সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
এই নীতি ঘোষণার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক শক্তিকে আরও সম্প্রসারিত করতে চায়। ২০১৯ সালে আমেরিকার সাথে একটি ব্যর্থ শীর্ষ সম্মেলনের পর থেকে উত্তর কোরিয়া বারবার বলেছে যে, তারা কখনই পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। উত্তর কোরিয়া নিজেকে একটি ‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) অনুসারে, কিম জং উন অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় বলেন যে, পিয়ংইয়ং ‘একযোগে পারমাণবিক এবং প্রচলিত সশস্ত্র বাহিনী গঠনকে এগিয়ে নেওয়ার নীতি’ অনুসরণ করবে।
কিম দলীয় সভার তারিখ নির্দিষ্ট না করেই দেশের প্রচলিত সশস্ত্র বাহিনীকে ‘আধুনিকীকরণ’ করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন।
ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে উত্তর কোরিয়ার নেতা আরও সাহসী হয়েছেন বলে খবরে উল্লেখ করা হয়। মস্কোর পক্ষে যুদ্ধের জন্য হাজার হাজার উত্তর কোরিয়ার সৈন্য পাঠানোর পর রাশিয়ার কাছ থেকে কিম গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন বলেও জানা যায়।
গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া সফর করেন। ওই সফরের সময় মস্কো এবং পিয়ংইয়ং একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে।
দক্ষিণ কোরিয়া সিউল বারবার সতর্ক করেছে যে, রাশিয়া পিয়ংইয়ংয়ের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করছে। যার মধ্যে রাশিয়ার সামরিক প্রযুক্তির সম্ভাব্য হস্তান্তরের বিনিময়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উত্তর কোরিয়ার সহায়তা রয়েছে।
কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের একজন সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন এএফপিকে বলেন, ‘মূলত, এটি (কিমের) দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে যে, পারমাণবিক শক্তিরই প্রতিরোধক হিসেবে সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং পিয়ংইয়ং তার প্রচলিত অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণের মাধ্যমে তার যুদ্ধ-ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চাইছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ার সাথে উত্তর কোরিয়ার সামরিক প্রযুক্তি সহযোগিতা প্রচলিত অস্ত্র খাতেও সম্প্রসারিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং ‘আধুনিক যুদ্ধ’-এর জন্য তৈরি আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা আসন্ন বৈঠকে মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদী এজেন্ডা হিসাবে উপস্থাপন করা হতে পারে’।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে শেষ দলীয় কংগ্রেসে কিম একটি উচ্চাভিলাষী সামরিক এজেন্ডা উন্মোচন করেন, সামরিক গুপ্তচর উপগ্রহ এবং কঠিন জ্বালানি-চালিত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো উন্নত অস্ত্র তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তারা আশা করছেন আসন্ন বৈঠকটি আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে।
এই মাসে বেইজিংয়ে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম ও পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাশে দাঁড়ান। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে আমেরিকাবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন।
সূত্র : বাসস