সাইবেরিয়ায় ইয়ার্স নামক আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে রাশিয়া।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবেরিয়ায় আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইয়ার্স মোতায়েন করেছে রাশিয়া। নিয়মিত প্রশিক্ষণ মহড়ার অংশ হিসেবে ও যুদ্ধ টহলের জন্য তা মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানায় দেশটি।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ভারী ক্ষেপণাস্ত্র সরঞ্জাম বিশেষ স্থাপনা থেকে বের হয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরণের কৌশলগত মহড়া শুরু করেছে, যার মধ্যে রাত্রিকালীন চলাচলও অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নির্ধারিত মহড়ার অংশ হিসেবে সাইবেরিয়ায় মোবাইল গ্রাউন্ড-ভিত্তিক রকেট সিস্টেম ‘ইয়ার্স’ এর ইউনিটগুলোকে টহল রুটে পাঠানো হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে যুদ্ধ টহলের দায়িত্ব পালনকালে ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুরা প্রযুক্তিগত কাজসহ ডজনখানেক দায়িত্ব ও নির্দেশনা সম্পন্ন করেছে।
এছাড়া সামরিক যানের চালক ও লজিস্টিক কর্মীরা টহল রুটে তীব্র কৌশলগত মহড়াও পরিচালনা করেন, মাঠ পর্যায়ে অবস্থান পরিবর্তন করেন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ডিভিশনগুলোকে ছড়িয়ে দেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয় যে, ইয়ার্স ক্ষেপণাস্ত্রের ক্রুরা মাঠ পর্যায়ে প্রকৌশল সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণ, ছদ্মবেশী কৌশল এবং যুদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনুশীলন করেছে। পাশাপাশি চলাচলের রুটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘এলেরন’ ড্রোনও ব্যবহার করেছে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ইয়ার্স হলো স্থানান্তরযোগ্য ভারী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা কঠিন জ্বালানিতে পরিচালিত হয়। এটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ৪টি ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। ওভারহেডগুলো একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে স্বাধীনভাবে গিয়ে আঘাত হানার জন্য এতে এমআইআরভি প্রযুক্তিও রয়েছে।
১২ হাজার কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম রাশিয়ার ইয়ার্স আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মূলত টোপোল-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি উন্নত সংস্করণ। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে এটি মোতায়েন শুরু করে দেশটি।
উল্লেখ্য, সাইবেরিয়া রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন একটি দেশ। এর পশ্চিম সীমান্তে ১২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হলে পুরো ইউরোপ নিশানায় পড়ে। আর পূর্ব দিকে মোতায়েন করা হলে আমেরিকাও নিশানায় চলে আসে। বস্তুত, ইয়ার্স এমন একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা সাইবেরিয়া সীমান্তের প্রতিটি দিকে মোতায়েন করা হলে, কয়েকটি দেশ ব্যতীত প্রায় পুরো বিশ্বকে ঘিরে নেয়।










