রবিবার | ২১ সেপ্টেম্বর | ২০২৫

স্বীকৃতি দিলেও ব্রিটেনের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রোডম্যাপে নেই হামাস

স্বীকৃতি দিলেও ব্রিটেনের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রোডম্যাপে নেই ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া গাজ্জার শাসক গোষ্ঠী হামাস।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটেন কর্তৃক আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার নির্যাতিত নিপীড়িত দেশটিকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেন, যার মাধ্যমে ফিলিস্তিন একটি রাষ্ট্র হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবে। ইসরাইলের সাথে যুদ্ধবিরতি ও বন্দীদের মুক্তি ঘটবে। জাতিসংঘের দ্বি-রাষ্ট্র নীতিতে ভর করে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা পাবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার রোডম্যাপটি কিভাবে কার্যকর হবে এবিষয়ে বিস্তারিত না জানালেও তিনি স্পষ্ট বলেছেন যে, “হামাস এর অংশ হতে যাচ্ছে না।”

আল জাজিরার লন্ডন প্রতিনিধি সোনিয়া গালেগো স্টারমারের পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, হামাসের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। রোডম্যাপ বা রাষ্ট্র গঠন পরিকল্পনায় হামাসকে শাসনকার্যের যেকোনো ধরণের ভূমিকা থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করলেও এক সময়ের ভয়ানক সাম্রাজ্যবাদী দেশটির পরিকল্পনা ও বক্তব্যে প্রকাশ পাচ্ছে যে, তারা গাজ্জায় গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে লিপ্ত হামাসকে এখনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবেই বিবেচনা করছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার হামাসের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও রাষ্ট্রের শাসনকার্য থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বলেন, মানবিক সংকট সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। এটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা আগে কেউ কখনো দেখেনি। এর ক্ষত বিপুল ও ভয়াবহ।

উল্লেখ্য, গাজ্জা এবং পুরো ফিলিস্তিনের শাসনকার্য থেকে হামাসকে বাদ দেওয়া মূলত ইসরাইল ও আমেরিকার পরিকল্পনা। গত ২৭ মে চূড়ান্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও নির্ধারিত বন্দীদের মুক্তির সাথে সাথে তা লঙ্ঘন করে বসে ইসরাইল। পরবর্তী যুদ্ধবিরতি ও বাকি বন্দীদের মুক্তির জন্য বারবার চেষ্টা চালায় গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্রটি। প্রতিবারই শর্ত রাখে যে, হামাসকে অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে। প্রয়োজনে আমেরিকার সেনারা গাজ্জার নিরাপত্তা দিবে। হামাস শাসনকার্যে কোনো ধরণের ভূমিকা রাখতে পারবে না।

ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি যুদ্ধবিরতির স্বার্থে শাসনকার্য থেকে বিরত থাকার শর্তটি এক পর্যায়ে মেনে নিলেও অবৈধ রাষ্ট্র ও তাদের মদদদাতা আমেরিকার শর্ত মোতাবেক সকল ইসরাইলী বন্দীর মুক্তি ও অস্ত্র ত্যাগের ক্ষেত্রে বেঁকে বসে। গাজ্জাকে তাদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বিশ্বাসঘাতকতার ফলে নিজেদের সকল শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সকল ইসরাইলী বন্দীকেও মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। যার ফলে গণহত্যা অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সর্বশেষ গাজ্জার মূল কেন্দ্র গাজ্জা সিটি দখলের পরিকল্পনা হাতে নেই ইসরাইল।

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img