ভারতের মধ্যপ্রদেশে বিজেপি বিধায়ক রমেশ্বর শর্মা মাদরাসাগুলোকে ধর্মান্তর কেন্দ্র বলে দাবি করেছেন এবং জেলা কালেক্টরদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশে মাদরাসাগুলো চলতে দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যেমে তিনি এ কথা বলেন।
রমেশ্বর শর্মা বলেন, “এনএইচআরসি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং ধর্মান্তর প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৌলভী ও মুল্লাদের তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে। সরকার ধর্মান্তরকে সহ্য করবে না। সরকার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে। দোষীদের ক্ষমা করা হবে না।”
তিনি বলেন, কিছু মাওলানা শিশুদের উর্দু শেখাচ্ছেন, যাতে তাদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তর করা যায়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) জানিয়েছে, তারা রাজ্যব্যাপী অভিযোগিত “ধর্মান্তর চক্র” উন্মোচনে তদন্ত চালাচ্ছে। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, হিন্দু শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যারা মাদরাসায় ভর্তি হয়ে শেষ পর্যন্ত ধর্মান্তরের দিকে প্রলুব্ধ হন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়, যেখানে বলা হয়েছে যে মধ্যপ্রদেশের ২৭টি অবৈধ মাদরাসায় ৫৫৬ হিন্দু শিশু লক্ষ্যবস্তু হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তাদের শিক্ষা নামে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এনএইচআরসি প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে লিখিতভাবে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে এবং ১৫ দিনের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপের প্রতিবেদন (এটিআর) দাখিলের অনুরোধ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত পাঁচ বছর ছয় মাসে মধ্যপ্রদেশে কঠোর ধর্মান্তর বিরোধী আইন চালু হয়েছে, যা রাজনৈতিক ও মিডিয়ায় ‘লাভ জিহাদ আইন’ নামে পরিচিত। আইনটি প্রথমে জানুয়ারি ২০২০ সালে ‘মধ্যপ্রদেশ রিলিজিয়াস ফ্রিডম অর্ডিন্যান্স’ হিসেবে কার্যকর হয় এবং পরে ২০২১ সালে ‘মধ্যপ্রদেশ রিলিজিয়াস ফ্রিডম অ্যাক্ট’ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।
আইনের উদ্দেশ্য হলো অভিযোগিত জোরপূর্বক বা প্রলুব্ধকরণ মাধ্যমে ধর্মান্তর রোধ করা। তবে মানবাধিকার গ্রুপ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বিরোধী নেতারা বলছেন, আইনটি বেশি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। তারা উল্লেখ করেছেন যে, মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু করা, তাদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা এবং নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা দেশের ধর্মীয় বিভাজনকে বাড়াচ্ছে।
সূত্র: মুসলিম মিরর