সোমবার | ২৭ অক্টোবর | ২০২৫

অওরাঙ্গজেবকে বি’স্মৃত করতে রেল স্টেশনের নামে পরিবর্তন আনলো বিজেপির সরকার

মোঘল সম্রাট বাদশাহ আলমগীর বা অওরাঙ্গজেবকে বিস্মৃত করতে অওরাঙ্গাবাদ রেল স্টেশনের নামে পরিবর্তন আনলো ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকার।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) মুসলিম মিররের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের সেন্ট্রাল রেলওয়ে গত শনিবার আচমকাই মহারাষ্ট্রের
অওরাঙ্গাবাদ রেল স্টেশনের নামে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেয়।

ঘোষণায় বলা হয়, মহারাষ্ট্রের অওরাঙ্গাবাদ রেলওয়ে স্টেশনটিকে আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘ছত্রপতি সম্ভাজিনগর রেলওয়ে স্টেশন’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। স্টেশনের নামকে শহরের নতুন পরিচয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলতে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, এই নামকরণ মারাঠা ঐতিহ্যকে সম্মান জানানোর একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার প্রতিফলন। এর আগে উগ্র হিন্দুত্ববাদী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন সরকার ২০২২ সালে মোঘল সম্রাটের নামে নামকরণ করা শহরটির নাম পরিবর্তন করে ‘অওরাঙ্গাবাদ’ থেকে ‘ছত্রপতি সম্ভাজিনগর’ করেছিলো।

এর কারণ হিসেবে তৎকালীন এই সরকার জানিয়েছিলো যে, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের পুত্র এবং মারাঠা রাজ্যের দ্বিতীয় শাসক ছত্রপতি সম্ভাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তারস এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

নাম পরিবর্তনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পূর্বে বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্রের মহাযুতি সরকার গত ১৫ অক্টোবর একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যার মাধ্যমে স্টেশনের নাম পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, হায়দারাবাদের ৭ম নিজাম মীর ওসমান আলী খানের শাসনামলে ১৯০০ সালে খোলা অওরাঙ্গাবাদ বা বর্তমান ছত্রপতি সম্ভাজিনগর রেলওয়ে স্টেশনটি এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রেখে আসছিলো। অওরাঙ্গাবাদ শহরটিও একটি বিশিষ্ট পর্যটন কেন্দ্র, যা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান অজন্তা এবং ইল্লোরা গুহাগুলোর কাছাকাছি অবস্থিত এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভের জন্য বিখ্যাত যা বিশ্বজুড়ে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

উল্লেখ্য, মোদির নেতৃত্বাধীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকার ভারতে মুসলিম ও মোঘলদের চিহ্ন এবং শ্রেষ্ঠত্ব বিস্মৃত করে ফেলার অংশ হিসেবে নানান উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

ভারতকে প্রকৃত অর্থে রাম রাজ্যে পরিণত করতে মুসলিমদের জমি দখল, ঘরবাড়ি ও দোকানপাট উচ্ছেদের পাশাপাশি একের পর এক মসজিদ, মাদরাসা, মাজার ও দরগাহ বা খানকাও ধ্বংস করছে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিতর্কিত নাগরিক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এর ধর্মীয় জাতিগত পরিচয়ে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে।

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষের প্রতি মুসলিমদের বৃহৎ সামাজিক কল্যাণ ও শক্তির উৎস ‘ওয়াকফ সম্পত্তিতে’ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে ওয়াকফ আইনেও অযৌক্তিক ও বিতর্কিত সংশোধন এনেছে।

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img