সোমবার | ২৪ নভেম্বর | ২০২৫

পাকিস্তানের ট্রানজিট বন্ধ; চাবাহারকে কেন্দ্র করে নতুন বাণিজ্য কৌশল গড়ছে আফগানিস্তান

পাকিস্তান করাচি হয়ে আফগান পণ্যের ট্রানজিট বন্ধ করে দেওয়ার পর আফগানিস্তান দ্রুতগতিতে বিকল্প বাণিজ্যপথ শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। কাবুল বিশেষভাবে ইরানের চাবাহার বন্দর এবং ভারতের সঙ্গে সম্প্রসারিত সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

আফগানিস্তানের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নূরউদ্দিন আজিজি জানান, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে বড় ধরনের বিঘ্ন তৈরি হয়েছে। এর ফলে আফগান রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকরা বৈশ্বিক বাজারে পৌঁছাতে আরও নির্ভরযোগ্য পথ অনুসন্ধানে বাধ্য হচ্ছেন।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

নূরউদ্দিন আজিজি বলেন, “পাকিস্তান করাচি হয়ে আফগান ট্রানজিট ও বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে এটি ছিল আমাদের প্রধান আন্তর্জাতিক সংযোগ। এখন আমরা নতুন রুট তৈরির জন্য কাজ করছি, যার মধ্যে চাবাহার অন্যতম। ইতোমধ্যে আমরা এটির ভিত্তি তৈরি শুরু করেছি।”

তিনি বলেন, আফগানিস্তান ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় চাবাহার করিডরকে পুরোপুরি সক্রিয় করতে কাজ করছে। বর্তমানে শুধু কিছু ক্ষুদ্র প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়ে গেছে, যা দুই দেশই সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, “এই সফর দুই দেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। আমাদের লক্ষ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সম্পর্ক পুনরায় সক্রিয় করা।”

নয়াদিল্লি সফরে বাণিজ্যমন্ত্রী সেখানে থাকা আফগান ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন যে, বাণিজ্যসংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে এবং ব্যবসায়িক আস্থা বাড়াতে কাবুল বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেবে।

২০২১ সালের পর এবারই প্রথম কোনো আফগানমন্ত্রী ভারত ট্রেড প্রমোশন অর্গানাইজেশন (আইটিপিও)-এর অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন। তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং জানান যে দুই দেশের কারিগরি দল ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাক-আফগান সম্পর্কের টানাপোড়েনে সীমান্ত পয়েন্টগুলো বারবার বন্ধ হয়েছে, রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের মোট ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি আফগানিস্তানকে দ্রুত বাণিজ্যপথ বৈচিত্র্যকরণের দিকে আরো বেশি তাগিদ দিয়েছে।

চাবাহার এখন কার্যকর বিকল্প হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে। একই সময়ে ভারতও আফগানিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফলে কাবুল একটি স্থিতিশীল, টেকসই ও কৌশলগতভাবে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক বাণিজ্য কাঠামো গড়ে তোলার দিকে এগোচ্ছে।

সূত্র: আরিয়ানা নিউজ

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img