বিনা কারণে ও বিনা উস্কানিতে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক গাজানফার আবু আতওয়ান নামের এক ফিলিস্তিনি যুবককে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে অবৈধ দেশটি।
টানা ৬৫ দিন ধরে অনশন চালিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে দখলদার ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ কারাগার থেকে মুক্তি দেয় আবু আতওয়ানকে।
বিনা কারণে আটক করে বিচার বা তদন্তের মুখোমুখি করা ছাড়াই বার বার তার বন্দিত্বের মেয়াদ কথিত প্রশাসনিক নির্দেশে নবায়ন করছিল অবৈধ ইসরাইল। আর এরই প্রতিবাদে মজলুম এই ফিলিস্তিনি অনশন ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
দখলদার ইসরাইলি সেনাদের হাতে গণহারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বেশিরভাগই কোনো কারণ ছাড়াই বন্দি হয়ে আছেন।
তাদের ব্যাপারে কোনো সাজানো বা মিথ্যা অভিযোগও দায়ের করতে না পেরে ইসরাইল এইসব বন্দিকে প্রশাসনিক কারণে বন্দি বা প্রশাসনিক বন্দি বলে থাকে।
এ ধরনের বন্দিদের মধ্য থেকে গাজানফার নামের সংগ্রামী ফিলিস্তিনি বন্দি ৬৫ দিন অনশন চালিয়ে বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছেন।
অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলি সেনারা গত বছরের অক্টোবর মাসে ২৮ বছর বয়স্ক নিরপরাধ গাজানফারকে আটক করেছিল।
তার বন্দিত্বের মেয়াদ দুই দফায় ছয় মাস করে মোট এক বছর পর্যন্ত নবায়নের নির্দেশ দিয়েছিল ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। আর এরই প্রতিবাদে গত মে মাস থেকে কারাগারে খাবার বর্জন তথা অনশন চালিয়ে আসছিলেন গাজানফার।
গাজানফারের এই ঘটনা ফিলিস্তিনি বন্দিদের ব্যাপারে বিশ্ব সমাজের নীরবতা প্রকাশ পেয়েছে। গাজানফারের আগেও অনেক নিরপরাধ ফিলিস্তিনি বন্দি অনশন ধর্মঘট করেছিল। কিন্তু বিশ্ব সমাজ এসব বন্দির মুক্তি দিতে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ওপর কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করেনি।
ইসরাইলি কারাগারগুলোতে ৪০ জন নারী ও আড়াইশ শিশুসহ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন বর্তমানে। এদের মধ্যে প্রায় ৫২০ জন কথিত প্রশাসনিক বন্দি তথা বিনা বিচারে বন্দি।
অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলি কারাগারে তাদের মানবেতর অবস্থায় রাখা হয়েছে। বন্দিদের অনেককেই কয়েকবার করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রেখেছে দখলদার ইসরাইল। ৫৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এক বা একাধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শিকার।
১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২২৫ ফিলিস্তিনি ইসরাইলি কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে শাহাদাত বরন করেছেন।
তাদের অনেককেই পরিকল্পিতভাবে এবং অনেকে চিকিৎসার অভাবে শহীদ হয়েছেন।
সূত্র : আল জাজিরা