বুধবার | ২৯ অক্টোবর | ২০২৫

ভারত আমেরিকার শতভাগ বন্ধু নয় : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও দেশটি এখনো আমেরিকার শতভাগ মিত্র হয়ে ওঠেনি। রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কেনার মতো কর্মকাণ্ডে আমেরিকা ‘বিরক্ত’, যা দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মার্কো রুবিও বলেন, “দেখুন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত আমাদের বন্ধু, কৌশলগত অংশীদার। কিন্তু এই মিত্রতা এখন পর্যন্ত শতভাগ পর্যায়ে পৌঁছায়নি। কারণ, ভারতের অনেক কর্মকাণ্ড ও ব্যবসায়িক নীতিই আমাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “ভারত একটি বড় দেশ। তাদের তেল, গ্যাস, কয়লা ও অন্যান্য জ্বালানির চাহিদা অনেক বেশি। সেই চাহিদা পূরণে তাদের আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রচলিত মূল্যে জ্বালানি কেনার সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু তারা তা করছে না।”

রুবিও অভিযোগ করে বলেন, “অন্যান্য বিকল্প সরবরাহকারী সহজলভ্য থাকা সত্ত্বেও ভারত নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার কাছ থেকেই তেল কিনছে, কারণ রুশ তেল এখন কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভারত সস্তায় রুশ তেল কিনে অনেক সময় তা আবার বেশি দামে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করছে। এই আচরণ সরাসরি রাশিয়ার যুদ্ধ-অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য।”

তিনি বলেন, “ভারতের এই ভূমিকা শুধু আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেই নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার দিক থেকেও একটি ‘ইরিটেশন পয়েন্ট’। এবং এটি একমাত্র নয়, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের আরও অনেক জায়গায় অসন্তোষ রয়েছে।”

এদিকে এর আগের দিন, বুধবার (৩০ জুলাই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন। তিনি বলেন, “ভারত আমাদের বন্ধু, কিন্তু বছরের পর বছর তারা নিজেদের বাজারে আমেরিকান পণ্যের প্রবেশে উচ্চ শুল্ক ও নানা অ-আর্থিক বাণিজ্য বাধা দিয়ে রেখেছে। আর তারা সবসময় রাশিয়ার কাছ থেকেই সামরিক সরঞ্জাম ও জ্বালানি কেনে, যখন পুরো বিশ্ব চায় রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করুক।”

তিনি ঘোষণা দেন, “এই অবস্থার কারণে ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হচ্ছে এবং রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি ও অস্ত্র কেনার কারণে অতিরিক্ত জরিমানাও আরোপ করা হবে।”

ট্রাম্পের ঘোষণার পর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য সম্পর্কে সরকার অবগত। আমরা এর প্রভাব মূল্যায়ন করছি। ভারতের পক্ষ থেকে একটি সুষ্ঠু, ভারসাম্যপূর্ণ এবং পারস্পরিক সুবিধাসম্পন্ন চুক্তির জন্য আলোচনা চলমান রয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকার হচ্ছে কৃষক, উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা। আমরা জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেব।”

সূত্র : এনডিটিভি

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img