শনিবার | ৪ অক্টোবর | ২০২৫

ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ গুপ্তচরের ফাঁসি কার্যকর করলো ইরান

গাজ্জায় গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুপ্তচর বাহমান চুবিয়াসলের ফাঁসি কার্যকর করলো ইরান।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।

বিচার বিভাগীয় সংবাদ সংস্থা মিজানে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ ও যোগসাজশ থাকার অভিযোগে গুপ্তচর বাহমান চুবিয়াসলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, তিনি মোসাদের হয়ে টেলিযোগাযোগ প্রকল্পের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল স্থানে কাজ করতেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ডেটাবেস সংগ্রহ ও ইরানি ডেটা সেন্টারে অনুপ্রবেশ করার জন্য সহযোগিতা নেওয়াই তাকে ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য ছিলো মোসাদের। তাকে ব্যবহারের অন্যান্য লক্ষ্যও ছিলো, যার মধ্যে ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম আমদানির সোর্স ও রুট খুঁজে বের করাও অন্তর্ভুক্ত ছিলো।

বিচার বিভাগীয় সংবাদ সংস্থাটির তথ্যমতে, চুবিয়াসল তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলেও সর্বোচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয় এবং মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।

চুবিয়াসল এই সেপ্টেম্বরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দ্বিতীয় গুপ্তচর। এর আগে বাবাক শাহবাজি নামক এক গুপ্তচরকে ফাঁসি দিয়েছিলো দেশটি। ইসরাইলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি।

তবে বাবাক শাহবাজির আইনী প্রতিনিধিরা দাবি করেছেন যে, চিঠি মারফত ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে কিয়েভে যুদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়ার পর শাহবাজিকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নির্যাতন চালানো হয়।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, দীর্ঘ দশকের ছায়াযুদ্ধের পর গত জুনে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে পূর্ণাঙ্গ সংঘাতে জড়িয়ে পড়া ইরান অনেক ব্যক্তিকে ফাঁসি দিয়েছে। মোসাদ সংশ্লিষ্টতা এবং দেশটিতে তাদের গোয়েন্দা কার্যক্রমে সহায়তা করার অভিযোগে তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়। আনা হয়েছে। জুনের পূর্ণাঙ্গ সংঘাতের পর দেশটি এখন পর্যন্ত মোসাদের ১০ জন এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। যাদের মধ্যে চুবিয়াসল তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণদের অন্যতম ছিলেন।

গত জুনের সন্ত্রাসী সংঘাতে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল দেশটিতে ১২ দিন বিমান হামলা চালায়। দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করে। দেশটির জনসাধারণও এই সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান অবৈধ রাষ্ট্রটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। আমেরিকা ইরানের এই আত্মরক্ষামূলক হামলার জবাবে অবৈধ রাষ্ট্রটির সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পক্ষ নিয়ে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালায়। অথচ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলায় ১,১০০ জন সাধারণ ইরানি প্রাণ হারিয়েছে।

এছাড়া ইরানিরা পুনরায় ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর এবং আরও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন। কেননা, রাশিয়া ও চীনের বিরোধিতা সত্ত্বেও পশ্চিমা দেশগুলো তেহরানের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। এর ফলে প্রায় এক দশক পর দেশটি আবারও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। গত রবিবার ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীরা ইরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করে নিষেধাজ্ঞাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বহাল করেছে।

সূত্র: আল জাজিরা

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img