বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, আমরা কোনো মব সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি না। কে রাজনীতি করবে কি করবে না, সেটা আইনের ব্যাপার। এটা সরকারের ব্যাপার। বিএনপি কোথাও কোনো মব সংস্কৃতি তৈরীও করেনি এবং বিএনপি উচ্ছৃঙ্খল জনতাতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। কিন্তু বিএনপির তো একটা অ্যানালাইসিস আছে যে, জাতীয় পার্টির ভূমিকা কি ছিল। আরও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ভূমিকা কি ছিল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘ভয়ংকর রক্তপিপাসু শেখ হাসিনার আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে কারা রক্ষা করেছে, কারা ১৬ বছর জনগণের লক্ষ কোটি টাকা পাচারের সুবিধা করে দিয়েছে। কারা এই দেশকে আওয়ামী ভয়ংকর স্বেচ্ছাতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব পালন করেছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে জাতীয় পার্টি। আপনারা একটা কুলিং টাইম চান।
তিনি বলেন, ২০০৮-২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা ২ বছরের একটা কুলিং টাইম দিয়েছেন। তারপরে টর্চার করেছেন। বিএনপি কখনো টর্চারে বিশ্বাস করে না। কুলিং টাইম আবার কিসের। আর টর্চার-ই বা কিসের। বিএনপি তো ক্ষমতায় নেই। এখন তো নির্বাচনই হয়নি। বিএনপি কখনো, কোনো অবস্থাতেই বেআইনীভাবে কোনো নির্যাতন, অত্যাচারে বিশ্বাসী নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যেকে ভুক্তভোগী। সবাই সর্বনিম্ন ৫০০শ মামলায় আক্রান্ত। আমরা যারা আক্রান্ত, কিন্তু আমাদের সামনে অন্য কেউ লাঞ্ছিত হোক, সেটা চাই না। কিন্তু, যারা ফ্যাসিবাদকে সমর্থন ও ফ্যাসিবাদের বয়ানে সুর মিলিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। জনগণ তাদের বিচার দেখতে চায়।
জাতীয় পার্টির মহাসচিবের এক বক্তব্যকে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন যে, জাতীয় পার্টির দায় এখন বিএনপিকে নিতে হবে। বিএনপি তো এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় নেই। এখনো তো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তাহলে আপনি (জাতীয় পার্টির মহাসচিব) কিসের দায়’র কথা বলছেন! নুরুল হক নুর ডাকসু’র সাবেক ভিপি। তাকে একটি কার্যালয়ের মধ্যে আক্রমণ করা হলো। আমরা প্রথমে শুনেছিলাম জাতীয় পার্টির সাথে গোলমাল। কিন্তু তাকে (নুর) যে আঘাত করছে, সেই লাল শার্ট পরা লোকটা কে? যে কেউ কারো বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে, এটা গণতন্ত্রের স্বীকৃত একটা পন্থা।
তিনি বলেন, যারা রাজনীতির কথা বলছেন, তারা বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন। বিএনপির যদি কোথাও সমালোচনা করার থাকে, তাহলে বিএনপি সেখানে সমালোচনা করবে। আপনি (জাতীয় পার্টির মহাসচিব) আবার দায়িত্ব নেয়ার কথা বলছেন কেন যে, বিএনপি দায়িত্ব পার্টির দায়িত্ব নিবে। আপনারা কারা? যখন ইলিয়াস আলী গুম হয়, তখন কোথায় ছিলেন? যখন চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরু গুম হয়, তখন জাতীয় পার্টি কোথায় ছিল? যখন ছাত্র নেতা এবং যুব নেতারা গুম হয়, তখন জাতীয় পার্টি কোথায় ছিল?
তিনি আরও বলেন, যখন ২০১৪ এর নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে কোনো ভোটার নেই, সেখানে কুকুর-বিড়াল এবং গরু-ছাগল ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেই নির্বাচনে যাবো না যাবো না করতে করতে আপনারা (জাতীয় পার্টি) আপনারা গেলেন। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর, প্রায় ৪৫ জন প্রার্থীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হলো। বিএনপি নির্বাচনে আসুন, সেটা শেখ হাসিনা চায়নি। সেদিন জাতীয় পার্টি কি ভূমিকা রেখেছে?