মঙ্গলবার | ২ ডিসেম্বর | ২০২৫

পাখতুনখোয়ায় ইমরান খানের ক্ষমতা কেড়ে নিতে ‘গভর্নর শাসন’ চালুর কথা ভাবছে পাকিস্তান

খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে ইমরান খানের দলের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিতে গভর্নর শাসন চালুর কথা ভাবছে পাকিস্তান সরকার।

রবিবার (৩০ নভেম্বর) পাক আইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার আকিল মালিক সংবাদমাধ্যমকে সরকারের গভর্নর শাসন চালুর পরিকল্পনার কথা জানান।

আকিল মালিক বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় গভর্নরের শাসন চালুর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

প্রদেশটিতে ক্ষমতায় থাকা ইমরান খানের দল পিটিআই ও নব মনোনীত মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদির সমালোচনা করে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদি ও তার দল কেপিতে (খাইবার পাখতুনখোয়ায়) কার্যকর পরিস্থিতি তৈরি করতে মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা কেন্দ্রের সাথে কোন ধরণের সমন্বয় বা সংহতি রাখতে চায় না। যেখানে এটির (সমন্বয় করে কাজ বা কেন্দ্র সরকারের কাজে সংহতি প্রকাশের) প্রয়োজন ছিলো, সেক্ষেত্রেও কোনো পদক্ষেপ নেয় না। পরিস্থিতি বিবেচনায় তাই গভর্নর শাসন চালুর বিষয়টি এখন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এটি একটি সাংবিধানিক ব্যবস্থা, যা অত্যাধিক প্রয়োজনে গ্রহণ করা যেতে পারে। আমি মনে করি, কেপির পরিস্থিতি নিজেই এই পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি রাখে, যেনো সেখানে একটি প্রশাসনিক কাঠামোর উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।

সরকার কি খেরপুরে গভর্নরের শাসন জারির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে কিনা জানতে চাইলে পাক আইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ২৩২ এবং ২৩৪ অনুচ্ছেদের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির এই কর্তৃত্ব রয়েছে। ফেডারেল সরকারও [এই বিকল্পটি চালুর] বিবেচনা করছে।

তবে পাক প্রতিমন্ত্রীকে যখন ২৩৪ অনুচ্ছেদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয় যে, “এর অধীনে একজন গভর্নরই কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে এই পদক্ষেপের (গভর্নর ব্যবস্থা চালুর) সুপারিশ করতে পারেন। ফেডারেল সরকারের এতে তেমন কিছু করার থাকে না।” তখন তিনি বলেন, গভর্নরের সুপারিশ শাসন জারির একটি বিকল্প মাত্র। স্বয়ং রাষ্ট্রপতিও এই পদক্ষেপ নিতে পারেন। তবে রাষ্ট্রপতিকে পরবর্তীতে (সংসদের) যৌথ অধিবেশনে এর অনুমোদন নিতে হয়।

তিনি আরো বলেন, সংবিধান অনুসারে, প্রাথমিকভাবে দুই মাসের জন্য গভর্নর শাসন জারি করা যেতে পারে। প্রয়োজনে তা আরো বাড়ানোও যেতে পারে।

বিলওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন পিপিপি থেকে নিযুক্ত খাইবার পাখতুনখোয়ার বর্তমান গভর্নর ফয়সাল করিম কুন্ডিকে এক্ষেত্রে অপসারণ করা হবে কি না জানতে চাইলে পাক প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপসারণের বিষয়টি খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

তবে তিনি তার বিরুদ্ধে ইমরান খানের কেপি সরকারের সাথে মিলে প্রদেশটিকে দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনায় যুক্ত থাকার অভিযোগও করেন। ইঙ্গিত দেন যে, তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে।

অপরদিকে গভর্নর ফয়সাল কুন্ডির সাথে তার সম্ভাব্য অপসারণের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এবিষয়ে তিনি এখনো কিছুই জানেন না। তবে তার দল এই সিদ্ধান্তে সম্মত হলে তিনি তা মেনে নিবেন।

যখন সাংবাদিকদের একজন তাকে বলেন যে, এই বিষয়ে মোট ৬ জনের নাম উঠে এসেছে। তখন কুন্ডি জিজ্ঞাসা করেন, নামগুলো কোথায় উঠে এসেছে? জবাবে, সাংবাদিক বলেন, তাদের সম্পর্কে গণমাধ্যমে রিপোর্ট করা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়ায় তিনি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলেন, এখন গভর্নর যদি মিডিয়া মারফত নিয়োগ করা হয়ে থাকে, তবে আল্লাহ পাক আমাদের উপর রহম করুন।

এআরওয়াই নিউজে জানানো হয়, শাহবাজ শরীফের সরকার কেপির গভর্নর পদের জন্য ফয়সাল কুন্ডি ছাড়া আরো ৫জনের কথা বিবেচনা করছে। তারা হলেন, আমির হায়দার হোতি, পারভেজ খট্টক এবং আফতাব শেরপাওয়ের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এদের তিনজনের কোনো একজনের ব্যাপারে যদি ঐক্যমতে পৌঁছানো না যায়, তবে দু’জন সাবেক সেনা কর্মকর্তার নামও বিবেচনাধীন রয়েছে। তারা হলেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) গায়ুর এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) খালিদ।

সূত্র: ডন, এআরওয়াই নিউজ

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img