ভারতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন-এর আমীর আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।
তিনি বলেন, বিনা অপরাধে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হামলা চালাচ্ছে সেদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। হামলাকারী উগ্র হিন্দুরা সন্তানের সামনেই বাবাকে নির্যাতন করছে এবং জোর করে হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ, জয় শ্রীরাম, প্রভু রামের জয় হোক এ ধরনের স্লোগান দিতে বাধ্য করছে। হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোতে মুসলিম পরিবারগুলো স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মকর্ম পালন ও নিরাপদে বসবাস করতে পারছে না।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা হাফেজ্জী বলেন, বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া মুসলিমদের ওপর এসব হামলার সংবাদ বারবার শিরোনাম হওয়ার পরেও ভারত সরকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনগত শাস্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। একই উঠানে এবং পাশাপাশি মসজিদ এবং মন্দির থাকার পরেও কোন ধরনের সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনা ঘটছে না।
আল্লামা হাফেজ্জী আরও বলেন, গত আগস্ট মাসেই মুসলিম নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। বিগত মার্চে ১৪ বছর বয়সী একজন মুসলিম বালক পিপাসার্ত হয়ে পানি পান করার জন্য হিন্দুদের একটি মন্দিরে প্রবেশ করেছিল। এই কারণে তাকে ভয়াবহভাবে প্রহার করা হয়েছে। তাছাড়া ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরে ৪৫ বছর বয়সী একজন মুসলিম রিকশাচালককে তার সন্তানের সামনে নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় ভয়ে তার ছোট্ট মেয়েটি পিতাকে প্রহার না করার জন্য আকুতি জানাচ্ছিল।
তিনি বলেন, গত তিন বৎসর যাবত ফ্রীল্যান্স সাংবাদিক আলিশান জাফ্রী ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে হামলার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে বলেছেন ভারতে মুসলিমবিরোধী ব্যাপক সহিংসতা হচ্ছে। তিনি প্রতিদিন এ ধরনের নির্যাতনের চারটি করে ভিডিও ধারণ করেন এবং অনেকগুলো ঘটনা যাচাই-বাছাই করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও প্রকাশ করেন। ২০১৪ সালের পর মুসলিমবিরোধী সহিংসতার আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসার জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
এদিকে ভারতে মুসলিমদের ওপর নির্যাতন হওয়া প্রসঙ্গে দিল্লী ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক প্রফেসর তানভীর বলেন, ভারতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নতুন বিষয় নয়। ক্ষমতাসীনদের উস্কানির কারণেই এসব সহিংসতা বাড়ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে গীতা পাণ্ডে বলেন, মোদির প্রথম মেয়াদে ক্ষমতার সময়ে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। বিশেষকরে কেউ গরুর মাংস খেলে বা বিক্রির চেষ্টা করলে, গরু জবাই করলে তাদের ওপর জঘন্যভাবে হামলা চালানো হতো। তবে কখনো এসব হামলার নিন্দা জানায় নি প্রধানমন্ত্রী।