ভারতের মধ্যপ্রদেশের খারগোন জেলায় এক মুসলিম শিক্ষককে প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। কারণ, তিনি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় প্রতীক পরতে না করেছিলেন।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) খারগোন জেলার বিস্তান এলাকার সন্দীপানি স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ভূক্তভোগী শিক্ষকের নাম শারুখ পাঠান। তিনি সন্দীপানি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ান। তিনি তাঁর ছাত্রদের হাতে তিলক ও কালাওয়া (পবিত্র সুতো) না পরতে বলেন। এ বিষয়ে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মীরাও পাঠানের পাশে দাঁড়ান এবং জানান, তাঁর উদ্দেশ্য ছিল কেবল শ্রেণিকক্ষে সমতা নিশ্চিত করা।
কিন্তু কয়েকজন উগ্র অভিভাবক বিষয়টি স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোকে জানান। এরপর সংগঠনগুলোর সদস্যরা স্কুলে ঢুকে ওই শিক্ষককে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে বলে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সকাল হিন্দু সমাজ এর সদস্যদের সামনে চাপের মুখে পাঠানকে ক্ষমা চাইতে হচ্ছে এবং তাঁকে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে।
শিক্ষক পাঠান পরে একটি লিখিত ক্ষমাপত্রও জমা দেন। তারপরও হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা ক্ষান্ত হয়নি। তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক বালরাম ভানওয়ারের কাছে ওই মুসলিম শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা একবাক্যে বলেছেন, পাঠানের বক্তব্য ভ্রাতৃত্ব ও সমতা প্রচারের অংশ, এটিকে ধর্মের ওপর আক্রমণ হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন, একজন শিক্ষককে জোর করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা এবং প্রকাশ্যে অপমান করা তাঁর পড়ানো শিশুদের কাছে ভীষণ ভুল বার্তা দেয়।
সূত্র: মুসলিম মিরর