ভারতের হরিয়ানার নুহে একটি হিন্দু পরিবারের পাঁচজন সদস্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এ জন্য উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ওই পরিবারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও থানায় মামলা দায়ের করেছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের নুহ জেলার মারোরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা ওই পরিবারের পাঁচজন সদস্য হলেন, চেত্রাম (৪৫), তার বর্তমান নাম মোহাম্মাদ, তার স্ত্রী রেখা, যিনি এখন রুখসার নামে পরিচিত, এবং তাদের তিনটি সন্তানও ইসলাম গ্রহণের পর নাম পরিবর্তন করেছেন। পরিবারটি জানিয়েছে যে তারা স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছে।
তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর চেত্রামের ভাই সতবীর নাগিনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সতবীর দাবি করেন, পরিবারটি চাপের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ করেছে। সেই সঙ্গে তিনি শাহিদ ও সিরাজউদ্দিন নামে দুই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন।
চেত্রাম এর আগে একটি শপথনামায় জানিয়েছেন যে তিনি ইসলামের প্রভাবে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, “ইসলামের ভালোর প্রভাবে, আমি আমার পরিবারের সঙ্গে ভয় বা লোভ ছাড়াই ইসলাম গ্রহণ করেছি। আমরা এখন পূর্বের ধর্মের সঙ্গে নিজেকে সম্পর্কিত করি না।”
পরবর্তীতে নুহ আদালতে দম্পতি অভিযোগ অস্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেছেন যে তারা স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
ভাইরাইল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তারা আদলতকে বলছেন, “আমাদের কেউ এটা করতে বাধ্য করেনি। আমরা এই ধর্ম (ইসলাম) পালন করতে থাকব।”
পরিবারের এই বক্তব্য সত্ত্বেও, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো নাগিনা থানার বাইরে প্রতিবাদ করেছে। তারা বৃহৎ সংখ্যায় জমায়েত হয় এবং মুসলিম গোষ্ঠীকে অভিযোগ করেছে যে, তারা এলাকায় হিন্দুদের পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত ধর্মান্তর ঘটাচ্ছে।
একটি পঞ্চায়েত বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্থানীয় নেতারা প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন যে তারা যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।
উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতারা দাবি করেন, “দুর্বল সম্প্রদায়ের মানুষদের টার্গেট করা হচ্ছে।”
পঞ্চায়েত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে তারা একটি স্মারকলিপি রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেবে। আদালতে হাজির হওয়ার পর, জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে পরিবারটি আত্মগোপনে চলে যায়।
সূত্র: মুসলিম মিরর