বুধবার | ৫ নভেম্বর | ২০২৫

এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি : নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে এককভাবে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় বিশ্বাস করি। যারা সেই আন্দোলনে আহত হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, তাদের ত্যাগের প্রতিদানই হবে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়া।

বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, গাজী সালাউদ্দিন ভাই আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একজন অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। তিনি আন্দোলনের সময় আহত হন, তার গলায় একটি স্প্লিন্টার ছিল, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই অবস্থাতেই তিনি এতগুলো দিন বেঁচে ছিলেন। গত ২৬ অক্টোবর তিনি মারা যান। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে আমরা জানতে পারি, তিনি বিএনপির কিছু কর্মীর দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, এ রকম জুলাই যোদ্ধারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে আছেন— যারা আহত হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, দেহে এখনো স্প্লিন্টার বহন করছেন। তারা আজও চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের পাশে রাষ্ট্রকে দাঁড়াতে হবে। এই পরিবারগুলোর আত্মত্যাগের কারণেই তো আমরা গণঅভ্যুত্থানে সফল হয়েছিলাম। আমরা ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করতে পেরেছিলাম এবং বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার স্বপ্ন দেখছি।

তিনি আরও বলেন, এ রকম জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হাজারো যোদ্ধা এখনো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অনেকেই আজও সুচিকিৎসার অভাবে ভুগছেন। এই আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছিল। কিন্তু তারা তা সম্পূর্ণভাবে পালন করতে পারেনি। ফলে আমাদের লাশের সারি বাড়ছে, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, শহীদের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই— যারা এখনো আহত অবস্থায় আছেন, যাদের শরীরে স্প্লিন্টার রয়েছে, যার অঙ্গহানি হয়েছেন— তাদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। একবার চিকিৎসা দেওয়াই যথেষ্ট নয়, দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে, না হলে গাজী সালাউদ্দিন ভাইয়ের মতো আরও অনেকে মৃত্যুবরণ করবেন।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, গাজী সালাউদ্দিন ভাইয়ের দুটি সন্তান রয়েছে, তার স্ত্রী অসুস্থ। তাদের পাশে রাষ্ট্রকে দাঁড়াতে হবে। শহীদদের পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করা উচিত। কারণ, তাদের ত্যাগের কারণেই আজ আমরা ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে পেরেছি। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই— আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও শহীদ পরিবারের দায়িত্ব যেন রাষ্ট্র নেয়। নির্বাচনের ডামাডোলে যেন আমরা এই পরিবারগুলোর কথা না ভুলে যাই। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার যেই আসুক না কেন, এই চিকিৎসা ও সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img