পাকিস্তানের অন্তত ৯টি স্থানে ভারতের বিমান হামলার পর দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার এই সংঘাতে বিশ্ব সম্প্রদায় সংযমের আহ্বান জানালেও, অনেক দেশ পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে পক্ষ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তুরস্ক পাকিস্তানের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রকাশ্যভাবে ভারতের পক্ষ নিয়েছে।
ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অংশ হিসেবে বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালানো হয়। কোটলি, বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ, মুজাফফরাবাদসহ কমপক্ষে ৯টি স্থানে মাত্র ২৫ মিনিটে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ভারত। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় অন্তত ২৬ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ধ্বংস হয়েছে মসজিদ ও আবাসিক স্থাপনা।
কাশ্মিরে পেহেলগামে এক বন্দুকধারীর হামলার ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হয় এবং এর প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটিকে ভারতের ঘৃণ্য যুদ্ধপ্ররোচনামূলক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে।
পাকিস্তানের জিও নিউজ জানিয়েছে, ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারত স্বীকার করেছে যে তিনটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
কাশ্মির সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হন।
এই উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে তুরস্ক। বুধবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ফোনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে কথা বলেন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংকট উত্তরণে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে।
অপরদিকে, ভারতীয় আগ্রাসনের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে ইসরাইল। ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “সন্ত্রাসীদের জানা উচিত, নিরীহদের বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করে লুকিয়ে থাকার কোনও স্থান নেই।”
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, জিও নিউজ