সোমবার, জুন ৯, ২০২৫

কায়রো থেকে রাফাহ সীমান্ত পর্যন্ত ‘গ্লোবাল মার্চ টু গাজ্জা’ করবেন ৩২ দেশের মানবাধিকারকর্মীরা

spot_imgspot_img

গাজ্জায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংহতি প্রকাশে হাজারো মানবাধিকারকর্মী মিশরের রাজধানী কায়রোয় জড়ো হচ্ছেন। ‘গ্লোবাল মার্চ টু গাজ্জা’ নামে এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে ৩২টি দেশের প্রতিনিধিরা মিশরীয় সিভিল সোসাইটি, কূটনীতিক এবং মানবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ১৫ জুন রাফাহ সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

আয়োজক জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজ্জা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি ও একাত্মতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আরব বিশ্ব ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই আন্দোলনের সমর্থনে প্রতিনিধি রয়েছে।

মানবাধিকারকর্মীরা ১২ জুন কায়রোয় সমবেত হবেন। পরদিন, ১৩ জুন তারা গাজ্জার সীমান্তবর্তী শহর আরিশে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে তারা একটি ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রায় অংশ নেবেন, যা ৩ দিনব্যাপী চলবে এবং শেষ পর্যন্ত রাফাহ সীমান্তে গিয়ে শেষ হবে। তাদের উদ্দেশ্য সীমান্তে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি গাজ্জার দিকে ফেরানো।

আলজেরিয়াভিত্তিক ‘ফিলিস্তিন বিজয় ও গাজ্জা সহায়তা উদ্যোগ’-এর সভাপতি ইয়াহইয়া সারি বলেন, “আমাদের কাফেলার নাম রাখা হয়েছে আল-আজম কাফেলা, অর্থাৎ ‘দৃঢ় সংকল্প কাফেলা’। এটি ইতোমধ্যেই তিউনিসিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সেখানে তিউনিসের কাফেলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা লিবিয়া হয়ে মিশরে পৌঁছাব।”

আলজেরিয়ার প্রখ্যাত আলেম সংগঠন ‘মুসলিম স্কলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর শীর্ষস্থানীয় সদস্য ইয়াহইয়া সারি আরও বলেন, “এই কাফেলা একটি মানবিক বার্তা বহন করছে। এটি বিশ্বমানবতার কণ্ঠস্বর হয়ে গাজ্জায় অব্যাহত নিষ্ঠুর অবরোধের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশ আলজেরিয়া বরাবরই ফিলিস্তিনের পক্ষে সোচ্চার। এই কাফেলা জল, স্থল ও আকাশপথে গাজ্জায় পৌঁছাতে চাওয়া আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা উদ্যোগের অংশ। এর মাধ্যমে আমরা গাজ্জাবাসীর ওপর পরিচালিত অপরাধকে প্রত্যাখ্যান করছি।”

গাজ্জাবাসীদের উদ্দেশে ইয়াহইয়া সারি বলেন, “আমরা বলতে চাই, আপনারা একা নন। আমরা আপনাদের যন্ত্রণায় অংশীদার। আমরা যতটুকু পারি, ততটুকু চেষ্টা করছি যেন আপনারা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।”

মরক্কোভিত্তিক সংগঠন ‘ফিলিস্তিনের জন্য জাতীয় কর্মকাণ্ড গ্রুপ’-এর সমন্বয়ক আবদুলহাফিজ সারিতি বলেন, “আমরা গ্লোবাল মার্চ টু গাজ্জা-তে অংশ নিতে মরক্কো থেকে বিমানযোগে মিশরে আসব এবং সেখান থেকে রাফাহ সীমান্তে যাব।”

তিনি বলেন, “গাজ্জায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে মরক্কোর জনগণ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।”

সরিতি আরও বলেন, “আমরা আয়োজকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব সমন্বয় সম্পন্ন করেছি। গাজ্জায় এখন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ও বোমার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা চলছে। সেখানে এক ভয়াবহ অবরোধের কারণে খাদ্য ও ওষুধ সংকট তৈরি হয়েছে। এটি একটি নজিরবিহীন মানবতা বিরোধী অপরাধ।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে ইসরাইলের এই গণহত্যা বন্ধ করা এবং গাজ্জায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ব্যবস্থা নেওয়া।”

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্দোলনকারীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তাদের গাজ্জা উপত্যকায় প্রবেশের কোনো উদ্দেশ্য নেই। তারা সীমান্তেই অবস্থান নেবেন এবং তাদের কেনা প্রায় ৩০০টি তাঁবু গাজ্জার ফিলিস্তিনিদের জন্য উপহার হিসেবে পাঠানো হবে।

সূত্র: আনাদোলু

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img