রবিবার | ৯ নভেম্বর | ২০২৫

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি পূরণে কাজ করবে

জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি পূরণে কাজ করবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি (পটুয়াখালী-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী) ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘শিক্ষা জাতীর মেরুদণ্ড; শিক্ষক শিক্ষার মেরুদণ্ড’। অথচ শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিগুলো অতীতের কোনো সরকার মেনে নেয়নি। যার কারণে আজও শিক্ষকরা রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে। শিক্ষককেরা অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নামতে হচ্ছে এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জানক। জামায়াতে ইসলামী অতীতেও শিক্ষকদের পাশে ছিল আগামীতেও থাকবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে পরবর্তী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম এমনকি সবশেষ জুলাই বিপ্লবে শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য।

শনিবার (০৯ নভেম্বর) দুপুরে বাউফল উপজেলার দাসপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষক সমাজকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ড. মাসুদ বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলে জাতি আবার পথ হারাবে। জাতির ওপর আবার নব্য ফ্যাসিবাদী দল চেপে বসবে। যারা ৫ আগস্ট পরবর্তী সারাদেশে খুন-গুম, হামলা-মামলা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, দখলবাজি, লুটপাট করছে তারা নির্বাচনে কারচুপির জন্য শিক্ষকদের কাছে ধরনা দিতে চেষ্টা করবে। তাদের ধোঁকা না পারতে তিনি শিক্ষক সমাজকে অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে শিক্ষক সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভোট গ্রহন থেকে শুরু করে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে শিক্ষকদের নিরপেক্ষ ভূমিকায় জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারে। কিন্তু শিক্ষক সমাজ যদি পক্ষপাতিত্বের ভূমিকা রাখে তাহলে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত না হয়ে ভোট চোরেরা নির্বাচিত হয়ে যাবে। ভোট চুরির কাজে ভোট চোরদের সহযোগিতা না করে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ভোট চোরদের তুলে দিতে হবে।

জুলাই জাতীয় সনদ প্রসঙ্গে ড. মাসুদ বলেন, একটি দল নিজেদেরকে বড় দল দাবি করলেও বড় দলের ভূমিকা রাখছে না। তারা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার পরিবর্তে ভয়ভীতি লাগাচ্ছে। তাদের শীর্ষ নেতারা দাবি করছে গণভোট সংবিধানে নাই কিন্তু নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই চাচ্ছে। হাসিনার তৈরি সংবিধান মানলে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সুযোগ নেই; হাসিনার সংবিধান মানলে ২০২৯ সালের ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। কারণ হাসিনার সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে হিসেবে পরবর্তী ৫ বছর পর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন। বিপ্লব পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের জন্যই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে সেই আলোকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। হাসিনার সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করলে সেটি হবে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। তাই নভেম্বরের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদের গণভোট দিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ড. মাসুদ বলেন, যখনই গণভোট হয়, গণভোটের প্রস্তাবে হ্যাঁ ভোট দিতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান হলেই এদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে কেউ জনগণের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করতে পারবে না, দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করতে পারবে না। কোনো সরকার জনগণকে শোষণ করতে পারবে না। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে। জুলাই আন্দোলনে দুই হাজার শহীদ ও পঞ্চাশ হাজারের অধিক আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী জুলাই যোদ্ধাদের রক্তের দায় শোধ করতে হলে অবশ্যই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। যেই জুলাই যোদ্ধারা জাতিকে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে রক্ষা করেছে সেই জুলাই যোদ্ধাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিকের। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটে “হ্যাঁ” ভোট দিয়ে নাগরিকদের সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img