বুধবার | ১০ ডিসেম্বর | ২০২৫

দেশপ্রেম পরীক্ষায় ‘বন্দে মাতারাম’ চাপিয়ে দেওয়া সংবিধান পরিপন্থী: ওয়াইসি

দেশপ্রেম পরীক্ষায় ‘বন্দে মাতারাম’ গায়তে জোর করা সংবিধান পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের হায়দারাবাদের সাংসদ ও অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের সভাপতি আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি।

তিনি বলেন, দেশপ্রেম ও আনুগত্যের মানদণ্ড হিসেবে বন্দে মাতারামকে কখনোই কারো উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। নিজ দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকা স্বাভাবিক এবং অপরিহার্যও বটে। কিন্তু দেশপ্রেমকে কোনো ধর্মীয় আচার বা গানের সঙ্গে অপরিহার্য ভাবে জড়িয়ে দেওয়া সংবিধানের বর্ণ ও আত্মার পরিপন্থী।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) লোকসভায় অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় গান বন্দে মাতরমের ১৫০ বছর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, সংবিধান সব নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছে। স্বাধীনতা দিয়েছে চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্মবিশ্বাস ও উপাসনার। একে কোনো ধর্মীয় প্রতীক, আচার বা গ্রন্থের সাথে শর্তযুক্ত করা যাবে না।

এছাড়াও বলেন, ভারতের সংবিধান ‘আমরা ভারতের জনগণ’ সুস্পষ্টভাবে এই বাক্য দিয়ে শুরু হয়েছে। কোনো দেব-দেবী বা ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে নয়। তাই রাষ্ট্রকে কোনো এক ধর্মের একচেটিয়া সম্পত্তিতে পরিণত হতে দেওয়া যাবে না।

গঠনসভায় (Constituent Assembly) হওয়া বিতর্কের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বন্দে মাতারামের নির্দিষ্ট কিছু চরণ নিয়ে আপত্তি ইতোপূর্বে আলোচনায় উঠে এসেছিলো এবং তা বিবেচনায়ও নেওয়া হয়েছিলো। প্রস্তাবনায় কোনো দেবীর নাম উচ্চারণ করে শুরু করার প্রস্তাবও তখন সরাসরি বাতিল করা হয়েছিলো।

ভারতের জনপ্রিয় এই মুসলিম নেতা জোর দিয়ে বলেন, ভারতীয় মুসলিমরা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং তার দ্বিজাতি তত্ত্বের সবচেয়ে বড় বিরোধী; আর সেই কারণেই তারা দেশ বিভাজনের পর ধর্মনিরপেক্ষ ভারতেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

শুধুমাত্র নিজেদেরকে একচেটিয়া ভাবে দেশপ্রেমিক হিসেবে জাহির করা উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিত্বদের আক্রমণাত্বক জবাব দিতে গিয়ে তিনি সরকার দলীয় বেঞ্চকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ১৯৪২ সালে এদের রাজনৈতিক পূর্বসূরিরা সিন্ধ, বাংলা এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে জিন্নাহর মুসলিম লীগের সঙ্গে মিলিত সরকার গঠন করেছিলেন এবং সেই সরকারগুলোই ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ১.৫ লাখ হিন্দু-মুসলিমকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঔপনিবেশিক শাসকদের পক্ষে যুদ্ধের জন্য নিয়োগ দিয়েছিলো।

সূত্র: মুসলিম মিরর

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img