গাজ্জার উপর চাপিয়ে দেওয়া অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে গঠিত একটি মানবিক বহর ‘ক্বাফিলাতুস্ সুমুদ’ সোমবার গভীর রাতে তিউনিসিয়া থেকে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছে। বহরটি তিউনিসিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় বিন গারদান শহর অতিক্রম করে রাস জেদির সীমান্ত দিয়ে লিবিয়ার ভেতরে ঢোকে।
এই বহরটির আয়োজন করেছে ‘ফিলিস্তিনের জন্য যৌথ কার্যক্রম সমন্বয় কমিটি’। তারা জানায়, এটি একটি প্রতীকী কর্মসূচি, যেখানে কোনো ত্রাণ বা অনুদান নেই। এর উদ্দেশ্য হলো গাজ্জার অবরোধ তুলে নিতে আন্তর্জাতিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং বিশ্বব্যাপী বেসামরিক প্রতিরোধ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা।
বহরটি সোমবার সকালে তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসের মুহাম্মাদ আল-খামিস সড়ক থেকে যাত্রা শুরু করে। এরপর তারা সুসা, স্ফাকস, কাবিস ও মদিনিন প্রদেশ অতিক্রম করে রাতের শেষভাগে লিবিয়ায় পৌঁছায়।
বহরে রয়েছে শতাধিক গাড়ি ও বাস। এতে আলজেরিয়া, মরক্কো ও মৌরিতানিয়া থেকে আসা দেড় হাজারের বেশি মাগরেবি কর্মী অংশ নিচ্ছেন। আয়োজকরা জানান, লিবিয়া থেকেও অনেকে এই বহরে যোগ দিচ্ছেন। সবাই ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
লিবিয়ায় প্রবেশের পর এই বহরটি ত্রিপলি, মিসরাতা, সিরত, বেনগাজি ও তবরুক হয়ে এগিয়ে যাবে। এরপর ১২ জুন তারা মিসরের সাল্লুম সীমান্ত পার হয়ে কায়রোতে যাবে। সবশেষে ১৫ জুন তারা গাজ্জার রাফাহ সীমান্তে পৌঁছাবে।
এদিকে একই সময়ে ‘মাদলিন’ নামের একটি জাহাজ, যাতে ১২ জন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী ছিলেন, সেটিকে সোমবার ভোরে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর কমান্ডোরা জবরদখল করে। এই জাহাজটিও গাজ্জার অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল।
‘ক্বাফিলাতুস্ সুমুদ’ ও ‘মাদলিন’ উভয়ই বিশ্বব্যাপী বেসামরিক একতার একটি বড় উদাহরণ। এই কর্মসূচিগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ জোট, ‘গ্লোবাল মার্চ টু গাজ্জা’ এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য যৌথ কার্যক্রম সমন্বয় কমিটি’।
এই উদ্যোগগুলো এমন এক সময় হচ্ছে, যখন গাজ্জা দীর্ঘদিনের অবরোধে ধ্বংসপ্রায়, এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় অসংখ্য মানুষ নিহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির সূচনা হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর ঐতিহাসিক অভিযান ‘তোফানুল আকসা’র মাধ্যমে, যা হামাসের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল।
সূত্র: আল জাজিরা