দলীয় রাজনীতির বিশুদ্ধতা ও সংস্কার নিয়ে লন্ডনে আলাপ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনে বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৫৪ বছর হয়ে গেলো। এরও আগে আমাদের পৌনে একশত বছরের জাতিগত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আছে। ফলে দেশে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে জাতী আশা করেছিলো। বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী লড়াই এবং জুলাই অভ্যুত্থানের পরে একটি সুস্থ, সমৃদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রত্যাশা করেছিলো জাতি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়েও দেশে যে রাজনৈতিক কালচার বিরাজ করছে, তা দেশবাসীকে চরমভাবে হতাশ করছে। অতএব দেশবাসী প্রত্যাশা করে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের মধ্যে যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, সেখানে দলীয় রাজনীতির বিশুদ্ধতা ও সংস্কারের আলাপ প্রাধান্য পাবে।’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বিএনপি দেশের প্রধানতম দল। ফলে রাজনীতিতে তাদের মতামত ও তাদের দলীয় প্রধানের গুরুত্ব থাকবে, তা স্বাভাবিক। অভ্যুত্থান পরবর্তীতে বিএনপি ও তাদের দলীয় প্রধানের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই নানা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে বিএনপির দলীয় প্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ আয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে তোড়জোর, সাক্ষাতে তার “অনুমোদন” এবং সেটা নিয়ে দেশের রাজনীতি ও মিডিয়ায় যেভাবে উচ্চমাত্রা চড়ানো হচ্ছে, তাতে দেশে রাজনীতিতে একক ব্যক্তিকেন্দ্রীকতার অনাকাঙ্খিত বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে একটি নির্দিষ্ট দলের প্রধানের সঙ্গে যে ধরণের আচরণ করা হচ্ছে, তাতে রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে দেশের পরিস্থিতি সেই দলের প্রতি ঝুকে যাবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যা স্পষ্টত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ভারসাম্য নষ্ট করবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বার্থে অন্তবর্তী সরকারের কাছে সবার সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ প্রত্যাশা করে।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে তার দল যেভাবে চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক সহিংসতা করছে, তা নিয়ন্ত্রণে তারেক রহমানকে যথাযথ ভূমিকা পালনে উদ্যোগ নিতে এবং দেশে পরিশুদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতি চর্চার পরামর্শ দিবেন বলে আমরা আশা করি।’
সংস্কার প্রক্রিয়ায় বিএনপি যেভাবে দ্বিমত করছে, তা নিয়ে কথা বলবেন এবং জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় বিএনপি আরো দায়বদ্ধ হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় স্থান পাবে বলে দেশবাসী আশা করছে।